তাড়াশের সেই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আরও তিন মামলা

রাব্বি শাকিল
প্রথম আলো

প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি (সাময়িক বহিষ্কৃত) রাব্বি শাকিলের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা করা হয়েছে। রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার প্রতারিত তিন যুবক আদালতে মামলাগুলো করেছেন। মামলার তিনজন বাদীর আইনজীবী শাহ জামাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ (আমলি আদালত-৭) উজ্জ্বল মাহমুদের আদালতে বৃহস্পতিবার মামলা তিনটির আবেদন জানানো হয়। আদালত মামলাগুলো এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য মোহপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

বগুড়ার আমানুল্লাহ তারেক নামের একজনের করা প্রতারণা মামলায় রাব্বি শাকিল পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে বর্তমানে বগুড়া কারাগারে রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর দুই সহযোগী হুমায়ন কবির ও সাইফুল ইসলাম। ১২ আগস্ট তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া ডিবি পুলিশের পরিদর্শক এমরান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের সম্মতিতে রাব্বি শাকিলের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছিল। তাঁর ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে তেমন কোনো স্থিতি নেই। তবে তিন বছরে তাঁর হিসাব নম্বরে প্রায় দুই কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য মিলেছে। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ এখন কোথায়, এ ব্যাপারে রিমান্ডে মুখ খোলেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীর আদালতে করা তিনটি মামলার বাদী হলেন মোহনপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের গফুর হোসেন (২৭), রাকিবুল হাসান (২৬) ও কারিশা গ্রামের মেহেদী হাসান (২৯)। তাঁরা প্রত্যেকেই মামলার এজাহারে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে তিন লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

একটি মামলার বাদী মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে সাপ্তাহিক চাকরির খবরপত্র ও চাকরির বাজার নামের দুটি পত্রিকায় রিশান সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিস থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে পিয়ন, টি–বয়, সিকিউরিটি গার্ড, নাইটগার্ড, গানম্যান পদে রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে লোক নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়।

মেহেদী হাসান বিজ্ঞপ্তি দেখে যোগাযোগ করলে রাব্বি শাকিল তাঁকে আরও ভালো চাকরির প্রস্তাব দেন। তিনি নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডে ‘অফিসার (সার্ভিস) ফর মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক’ পদে মাসিক ৩৬ হাজার টাকার চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পান। বিনিময়ে তিন লাখ টাকা আগাম দেন। ওই নিয়োগপত্র নিয়ে রাজশাহী শাখায় খোঁজ নিতে গেলে ফাঁস হয়, নিয়োগপত্র ভুয়া। রাব্বি প্রতারক নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি ভয়ভীতি দেখান।
আরেক বাদী রাকিবুল হাসান মামলায় অভিযোগ করেন, পাঁচ লাখ টাকার চুক্তিতে সোনালী ব্যাংকে পিয়ন পদে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দেন রাব্বি শাকিল। আগাম তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর নিয়োগপত্র নিয়ে ব্যাংকের রাজশাহীর মতিহার শাখায় যোগ দিতে গেলে জানানো হয়, তা ভুয়া। এরপর টাকা ফেরত চাইতে রাব্বি শাকিলের কার্যালয়ে গেলে নানাভাবে হুমকি দেন তিনি। আরেক বাদী আবদুল গফুরও একই রকম অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়ুন