ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বরগুনার পাথরঘাটার পপিফজিলা আক্তার ওরফে পপির কোনো সন্ধান গত তিন দিনেও মেলেনি। এতে ফজিলা আক্তারের স্বজনেরা উদ্বেগ–উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
নিখোঁজ ফজিলা আক্তার (২৫) বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছোট টেংরা গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে। স্বজনেরা দুর্ঘটনার পর এমভি অভিযান-১০ লঞ্চসহ ঝালকাঠি ও বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে এবং বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়েও তাঁর সন্ধান পাননি।
অন্যদিকে ওই লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্ধার হওয়া বরগুনার পাথরঘাটার আড়াই বছরের শিশু তাবাচ্ছুম, মাইয়েদা আক্তার (১৫), মো. রাকিব হোসেন (১৬) ও আবদুর রাজ্জাকের (৫৫) লাশ তাদের নিজ নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। প্রতিটি লাশের দাফন ও আনুষঙ্গিক খরচের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসন ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে ঝালকাঠি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরগুনার ৩৬টি লাশ গ্রহণ করেন বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান। পরে তিনি ওই লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন। পরদিন শনিবার পাথরঘাটার ওই চারজনের জানাজায় তিনি অংশ নেন।
শনিবার তাবাচ্ছুমের লাশ তাঁদের ঘুটাবাছা গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। এ সময় তাবাচ্ছুমের বাবা মোহাম্মদ নাছরুল্লাহ তুহিন তার জানাজা পড়ান। এ ছাড়া একই দিন পাথরঘাটার কালমেঘা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক, চরদুয়ানী ইউনিয়নের তাফালবাড়িয়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে মাইয়েদা আক্তার ও কালমেঘা ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের শাহ জামালের ছেলে রাকিব হোসেনের লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অনেক যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেককে দেখা গেছে, প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। প্রচণ্ড শীতের রাতে তাঁরা নদী সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন কি না, তা স্বজনেরাও বলতে পারেননি। তবে অনেককে আবার দেখা গেছে, লঞ্চ থেকে নামার সময় তাঁর শিশুসন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এ সময় তাঁরা আবার লঞ্চের দিকে দৌড়ে গিয়ে আগুনে আটকা পড়ে যান। এ অবস্থায় শিশু, নারীসহ লঞ্চ যাত্রীদের চিৎকারে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।