তিন বছর ধরে অন্যের চাল তুলছেন ইউপি সদস্য

কয়েক ব্যক্তি সম্প্রতি এমন অভিযোগ তুলে বলছেন, তাঁদের নামে যে চাল উত্তোলন করা হয়েছে, তা জানতেন না তাঁরা।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে তিন বছর ধরে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই ইউনিয়নের কয়েক বাসিন্দা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় তাঁদের নাম দেখে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম বিল্লাল শেখ। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। একই অভিযোগ উঠেছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার আলিম আল মোরশেদের বিরুদ্ধেও। ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর ইসলাম, খবির খান, ভানু বেগম, সাহেব আলী ও শ্যামলা বেগম সম্প্রতি ওয়ার্ড সদস্য ও ডিলারের বিরুদ্ধে আনা লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

অভিযোগকারীরা বলছেন, ১০ টাকা মূল্যের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের তালিকাভুক্তির জন্য তাঁরা ২০১৭ সালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইউপি সদস্য বিল্লাল শেখের কাছে জমা দেন। বিল্লাল শেখ কর্মসূচির কার্ড ইস্যু হওয়ার বিষয়টি আবেদনকারীদের না জানিয়ে ডিলারের সঙ্গে যোগসাজশে তিন বছর ধরে চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। সম্প্রতি গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে অভিযোগকারীরা তাঁদের নামে কার্ড ইস্যু হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে কর্মসূচির তালিকায় নিজেদের নাম দেখে ডিলারের কাছে যান। সেখানে গিয়েও তাঁরা তালিকায় নিজেদের নাম দেখতে পান। কিন্তু ডিলার তাঁদের জানান, এসব নামের বিপরীতে ইতিমধ্যে চাল উত্তোলন করা হয়েছে।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীরা চাল পাচ্ছেন না, এমন লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
রথীন্দ্রনাথ রায়, ইউএনও, কাশিয়ানী

অভিযোগকারী সাহেব আলী খান ও শ্যামলা বেগম বলেন, ১০ টাকা কেজি দরের চালের তালিকায় তাঁদের নাম আছে। কিন্তু বিষয়টি তাঁরা জানতেন না।

গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) হাচান মিনা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাঁকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৬ জন সুবিধাভোগীর নামের একটি তালিকা দেওয়া হয়। তাঁদের সবাইকে ইউনিয়ন পরিষদে আসার জন্য বলা হয়। চাপ্তা মধ্যপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা পরিষদে এসে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় তাঁদের নাম দেখে অবাক হয়ে যান।

ইউপি সদস্য বিল্লাল শেখ বলেন, যে কার্ডগুলো নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো তিনি করেননি। কে বা কারা করেছে, তা তিনি জানেন না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা চাল আত্মসাতের অভিযোগও সঠিক নয়।

চাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে কাশিয়ানীর ইউএনও রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীরা চাল পাচ্ছেন না, এমন লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।