ত্বকী হত্যার বিচারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে ২৩ বিশিষ্টজনের বিবৃতি

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ চেয়ে দেশের ২৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। আজ রোববার সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার আট বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ৬ মার্চ। এই দীর্ঘ সময়েও আলোচিত এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র আদালতে পেশ না করায় আমরা মর্মাহত, সংক্ষুব্ধ। এটি অত্যন্ত পরিতাপের ও বেদনার। হত্যাকাণ্ডের বছর না যেতেই এর তদন্তকারী সংস্থা হত্যার সব রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছিল, যা আমরা সংবাদমাধ্যমে জেনেছি। তারা অপরাধী, অপরাধের স্থান-কাল-কারণসহ বিস্তারিত প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তারপরও দীর্ঘ সময়ে সেই অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এ বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা যেমনি উৎসাহিত হচ্ছে, অপর দিকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। একটি বিচারহীনতা অসংখ্য বিচারহীনতার পথ তৈরি করে দেয়। বছরের পর বছর বিচার বন্ধ হয়ে থাকা কখনো কাম্য হতে পারে না।

মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে এমনটি আমাদের কাম্য নয়। আমরা অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে এই বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর যথাযথ নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’    

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ভাষাসৈনিক, লেখক ও গবেষক আহমদ রফিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রবীন্দ্র-গবেষক শিক্ষাবিদ ড. সন্‌জীদা খাতুন, চিত্রশিল্পী ও ভাষাসৈনিক মুস্তাফা মনোয়ার, শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার, শিক্ষাবিদ ড. হায়াৎ মামুদ, শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, মানবাধিকার সংগঠক সুলতানা কামাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. সফিউদ্দিন আহমদ, শিক্ষাবিদ ও লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, শিক্ষাবিদ অধ্যপক শফি আহমেদ, নারী অধিকারকর্মী ও লেখক ড. মালেকা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও লেখক-গবেষক মফিদুল হক, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যপক এম এম আকাশ, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এরপর থেকে ত্বকী হত্যার বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ ধারাবাহিকভাবে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।