থানা চত্বরে সালিসের পর ফটকেই বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

দামুড়হুদা মডেল থানা ভবন।
ফাইল ছবি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বিরোধপূর্ণ পাঁচ কাঠা জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে ইসরাফিল মোল্লা (৭০) নামের এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে ও কিলঘুষি মেরে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে দামুড়হুদা মডেল থানা চত্বরে ওই জমি নিয়ে সালিস শেষে প্রধান ফটকের কাছেই এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইসরাফিল দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পীরপুরকুল্লা গ্রামের মৃত জবান আলীর ছেলে। পুলিশ এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে টুপি শহীদুলকে (৫২) আটক করেছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, পীরপুরকুল্লা গ্রামে পাঁচ কাঠা জমির স্বত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নজরুল ইসলাম মোল্লা ও বজলুর রহমানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। সমস্যা সমাধানে উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে আজ দুপুরে দামুড়হুদা থানায় সালিসের আয়োজন করা হয়। এতে বজলুর রহমানের পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম এবং নিহত ইসরাফিল মোল্লা চাচাতো ভাই নজরুল ইসলাম মোল্লার পক্ষে অবস্থান নেন। থানা–পুলিশ উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সমাধান করে দেন। পরে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য বলেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, থানা চত্বরের গোলঘরে সালিস শেষে বের হওয়ার সময় দুই পক্ষ নতুন করে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। থানা চত্বর থেকে তর্কবিতর্ক শুরু হলেও প্রধান ফটক পার হওয়ার পর তা হাতাহাতিতে পরিণত হয়। ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম প্রতিপক্ষ ইসরাফিল মোল্লার নাতি আল আমিন মোল্লাকে পেটাতে থাকলে ইসরাফিল বাধা দেন। এতে ভাইস চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে ইসরাফিল মোল্লাকে কিলঘুষি ও পিটিয়ে জখম করেন।

আহত ইসরাফিল মোল্লাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীর মো. আসিফ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তানভীর বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছানোর আগেই মারা যান ইসরাফিল।

নজরুল ইসলাম মোল্লা অভিযোগ করেন, বজলুর রহমানের কাছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম সালিসে একতরফা ভূমিকা নেন। তিনি নিরপেক্ষ থাকলে ইসরাফিল মোল্লাকে এভাবে মরতে হতো না।

তবে ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামের দাবি, বজলুর রহমান দুর্বল শ্রেণির হওয়ায় সালিশে তিনি তাঁর (বজলুর) পক্ষ নিয়েছিলেন। বৃদ্ধ ইসরাফিল মোল্লাকে তিনি কোনো আঘাত করেননি। অল্প বয়সী একটি ছেলের সঙ্গে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতি হয়েছিলমাত্র।

দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।