থানার ছাদে এসআইয়ের ‘আত্মহত্যা’

হাসান আলী

পাবনার আতাইকুলা থানার ছাদে নিজের পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে হাসান আলী (২৭) নামে থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। রোববার সকালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

হাসানের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি ৩৭তম আউটসাইট ক্যাডেট হিসেবে দুই বছর আগে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।

থানা–পুলিশের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসান আলী অবিবাহিত। তিনি থানার ব্যারাকের একটি কক্ষে থাকতেন। শনিবার রাতে খাবার খেয়ে ব্যারাকে ঘুমাতে যান। রাত দেড়টার দিকে মুঠোফোনে কথা বলার জন্য কক্ষ থেকে বের হন। এরপর থেকে তাঁর আর খোঁজ ছিল না। রোববার সকালে তিনি থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে থানায় দেখতে না পেয়ে সহকর্মীরা খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে থানার ছাদে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসান আলীর লাশ মেলে। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত পিস্তলটি হাতেই ছিল।

হাসান আলীর সহকর্মী এসআই রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁরা দুজন ব্যারাকে এক কক্ষেই থাকতেন। রাত দেড়টার দিকে হাসান আলী মুঠোফোনে কথা বলার জন্য বের হন। এর মধ্যেই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ফলে কখন তিনি (হাসান আলী) আত্মহত্যা করেছেন, তা টের পাননি। সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে।’

এসআই রাশিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার জানামতে, হাসান আলীর কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তবে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছিলেন।’

আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, হাসান আলী ৩৭তম আউটসাইট ক্যাডেট হিসেবে দুই বছর আগে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। এক বছর রাজশাহীর সারদায় প্রশিক্ষণ শেষে এক বছর পাবনায় শিক্ষানবিশ ছিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি এসআই পদে আতাইকুলা থানায় যোগ দেন।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘নিহত হাসান আলী দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তিনি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে যত দূর যানা গেছে, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে তিনি মানসিকভাবে অশান্তিতে ভুগতেন। এ কারণেই আত্মহত্যা করতে পারেন। আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। পুলিশের রাজশাহীর ক্রাইমসিন ইউনিটকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ক্রাইমসিন ইউনিটের সদস্যরা আতাইকুলা থানার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। অন্যদিকে নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরাও পাবনায় আসছেন।’

মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ক্রাইম ইউনিটের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। ময়নাতদন্ত শেষে পাবনা পুলিশ লাইনসে জানাজা শেষে লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।