থানায় অস্ত্র জমা দিলেন পাবনার আ.লীগ নেতারা

অস্ত্র হাতে গণপূর্ত ভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘মহড়া’। ৬ জুন পাবনা গণপূর্ত ভবনে
ছবি: সংগৃীত

পাবনার গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতারা তাঁদের শটগান দুটি থানায় জমা দিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁরা নিজেরাই জেলা সদর থানায় উপস্থিত হয়ে অস্ত্র দুটি জমা দেন। ব্যক্তিগত কাজে জেলার বাইরে থাকবেন বলে অস্ত্র দুটি জমা দিয়েছেন বলে থানায় দেওয়া লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছেন তাঁরা।

অস্ত্র জমা দেওয়া আওয়ামী লীগের দুই নেতা হলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু। এদিকে অস্ত্র নিয়ে ‘মহড়া’র ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহম্মেদ। তিনি বলেন, গণপূর্ত ভবনে অস্ত্রের মহড়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই তদন্ত চলছে। এর মধ্যেই গতকাল রাত ১১টার দিকে দুজন থানায় উপস্থিত হয়ে তাঁদের লাইসেন্স করা শটগান জমা দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেন। পরে আবেদন নথিভুক্ত করে শটগান দুটি জমা নেওয়া হয়।

লিখিত আবেদনে কী উল্লেখ করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে জেলার বাইরে থাকবেন। তাই অস্ত্র জমা দিচ্ছেন তাঁরা।

তবে পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলছেন, অস্ত্র দুটি জব্দ করে থানায় রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে অস্ত্র হাতে মহড়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বৈধ অস্ত্র হলেও ওভাবে মহড়া দেওয়া আইনের পরিপন্থী। ফলে অস্ত্র দুটির লাইসেন্স বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আইনজীবী আবদুল আহাদ বলেন, ‘আমাদের জানামতে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে দলের দুই নেতার হাতে অস্ত্র ছিল। এরপরও একটি চক্র বিষয়টি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তদন্ত করছে। তদন্তে ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে কোনো দোষ প্রমাণিত হলে জেলা আওয়ামী লীগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

প্রসঙ্গত, ৬ জুন দুপুরে লোকজন নিয়ে গণপূর্ত বিভাগের পাবনা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন। তাঁর পেছনে শটগান হাতে ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু।
পরে ভবনে থাকা সিসিটিভির একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনার ঝড় ওঠে। কিছু ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি কাজের সুবিধা পেতেই আওয়ামী লীগ নেতারা এই মহড়া দিয়েছেন। এ নিয়ে আজ রোববার প্রথম আলোয় ‘অস্ত্র হাতে আ.লীগ নেতাদের মহড়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।