থেমে থেমে হাঁটছে শাহাদাত, বাবা-মা খুশি

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গতকাল নিজে নিজে হাঁটার চেষ্টা করে শিশু শাহাদাত l ছবি: প্রথম আলো
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গতকাল নিজে নিজে হাঁটার চেষ্টা করে শিশু শাহাদাত l ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সাংসদের ছোড়া গুলিতে আহত শিশু শাহাদাত হোসেন ওরফে সৌরভ একা একা হাঁটতে পারছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শাহাদাতের হাঁটার দৃশ্য দেখে খুশি তার বাবা-মা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শাহাদাতের বাঁ পায়ের ক্ষতস্থানের সেলাই কাটা হয়েছে। কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়াই সে হাঁটতে পারছে। তবে তা থেমে থেমে। ১৫-২০ পা গিয়েই বসে পড়ছে। আবার হাঁটছে।
সন্তানের হাঁটা দেখে মা সেলিনা বেগম খুব খুশি। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন হয়া গেইলো হামরা পুরা পরিবার নিয়া এই হাসপাতালোত আছি। অ্যাটে চিকিৎসার কোনো অসুবিধা হয়ছে না। হামার ছইলটার হাঁটা দেখি বুকটা ভরি যায়।’ শাহাদাতের পায়ের হালকা ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন সেলিনা বেগম।
শাহাদাত বলে, ‘ডান পায়োত খুব একটা অসুবিধা হয়ছে না। কিন্তুক বাঁ পাওটাত একনা কষ্ট হয়। নিজে নিজে অল্প একনা করি হাঁটার চেষ্টা করছি।’
হাসপাতালের পরিচালক আ স ম বরকতুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটি আরও একটু সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। সে এখন নিজে থেকে হাঁটতে পারছে। আর হাসপাতালের সমাজসেবা বিভাগ থেকে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে এ সপ্তাহে তাকে ছাড়পত্র দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
২ অক্টোবর সকালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বাড়ি থেকে হাঁটতে বেরিয়েছিল স্থানীয় বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শাহাদাত হোসেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংসদ মন্জুরুল ইসলাম ওরফে লিটন গুলি ছুড়লে শিশুটির বাঁ পায়ে একটি ও ডান পায়ে দুটি গুলি লাগে। ওই দিনই তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সাংসদ মন্জুরুল গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে গাইবান্ধা কারাগারে রয়েছেন।
শাহাদাতের পরিবার থাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ গ্রামে। সে গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে চাচা শাহজাহান আলীর সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিল সৌরভ। সকাল পৌনে ছয়টার দিকে বাড়ির পাশে সুন্দরগঞ্জ-বামনডাঙ্গা সড়কে ব্র্যাক মোড় এলাকায় গুলিবর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।