দর্শনা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে এসেছে ৮২ হাজার ১০০ টন চাল

দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভারত থেকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ৮২ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে
ফাইল ছবি

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দর হয়ে রেলপথে ভারত থেকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ৮২ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারি সিদ্ধান্তে পয়লা জানুয়ারি থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এসব চাল আমদানি করা হয়। যার মধ্যে চলতি এপ্রিল মাসেই আমদানি হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন।

দর্শনা বন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এপ্রিল মাসে ভারত থেকে মোট ১০ র‌্যাক (রেল কার্গো বা কনটেইনার ট্রেন বা মালগাড়ি) চাল আমদানি করা হয়েছে। সাধারণত এক র‌্যাকে ৪২টি ওয়াগন থাকে। তবে মাঝে মাঝে ৪০ ওয়াগনও আসে। এই ১০ র‌্যাকের মধ্যে সরকারিভাবে (জিটুজি) এসেছে ৪ র‌্যাক এবং বেসরকারি উদ্যোগে এসেছে ৬ র‌্যাক। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে ৪ র‌্যাক, ফেব্রুয়ারি মাসে ৬ র‌্যাক ও মার্চ মাসে ১৬ র‌্যাক চাল আমদানি করা হয়েছে। ওই তিন মাসে আমদানি করা চালের পুরোটাই বেসরকারিভাবে আনা হয়েছে।

দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারি-বেসরকারিভাবে এই বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করা হলেও তা স্থানীয় বাজারে কোনো প্রভাব ফেলেনি। সরকারিভাবে আমদানি করা চালের চালানগুলো চলে গেছে বগুড়ার সান্তাহারে অবস্থিত আঞ্চলিক খাদ্যগুদামে। বেসরকারিভাবে আমদানি করা চালের চালানগুলো ভাগ হয়ে যশোরের নওয়াপাড়া, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদী গুদামে পাঠানো হয়।

এদিকে সরকারি-বেসরকারিভাবে এই বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করা হলেও তা স্থানীয় বাজারে কোনো প্রভাব ফেলেনি। কারণ, আমদানি করা চালের চালানগুলো চলে গেছে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও যশোর জেলায়।

বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি র‌্যাকে আমদানি করা চালের পরিমাণ গড়ে ২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। সে হিসাবে চলতি মাসে সরকারি উদ্যোগে আনা ৪টি র‌্যাকে আমদানি করা চালের পরিমাণ ৯ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৩ র‌্যাক চাল আমদানি হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, বেসরকারি উদ্যোগে চাল এসেছে ৭২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।

দর্শনা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান হাবু জানান, সরকারিভাবে (জিটুজি) খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে চাল আমদানি হচ্ছে এবং বেসরকারিভাবে চালের আমদানিকারক যশোরের নওয়াপাড়ার মজুমদার ট্রেডিং, মজুমদার এন্টারপ্রাইজ ও মাহবুব ব্রাদার্স।

দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক মীর মো. লিয়াকত আলী জানান, ভারতের বিভিন্ন জেলা থেকে কেনা চালগুলো পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গেদে হয়ে দর্শনা বন্দরে আসে। দর্শনায় প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে সরকারি চালগুলো বগুড়ার সান্তাহারে অবস্থিত আঞ্চলিক খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়। বেসরকারিভাবে আমদানি করা চালের চালানগুলো ভাগ হয়ে যশোরের নওয়াপাড়া, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদী গুদামে পাঠানো হয়।

এই রেলওয়ে কর্মকর্তা বলেন, প্রায় ২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চালভর্তি আরও একটি রেলওয়ের র‌্যাক দর্শনায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে, যা আজ বুধবার দিবাগত রাতেই দর্শনায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারি সিদ্ধান্তে এসব চাল আমদানি করা হচ্ছে। আমদানি করা চালের মান বেশ ভালো। আরও বেশ কয়েকটি চালের চালান পাইপলাইনে রয়েছে।