দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারণার অভিযোগ, কালিয়া আ.লীগের ৭ নেতাকে বহিষ্কার

আওয়ামী লীগের লোগো

নড়াইলের কালিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে কালিয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ সাত নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই কথা জানানো হয়।

এই সাতজন হলেন কালিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মুজিবুর রহমান, কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক (প্রিন্স), দপ্তর সম্পাদক বিশ্বনাথ স্বর্ণকার ও মহিলাবিষয়ক সম্পাদক চন্দনা হক, হামিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী গোলাম মোহম্মদ, ইলিয়াসাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোল্লা সেকেন্দার আলী এবং সালামাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আবদুল আউয়াল।

দলীয় সূত্র জানায়, চন্দনা হক স্থানীয় নড়াইল-১ (কালিয়া সদরের একাংশ) আসনের সাংসদ বি এম কবিরুল হকের স্ত্রী। আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ফকির মুশফিকুর রহমানকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আগেই বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কারসংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. ওয়াহিদুজ্জামান (হীরা) লিখিত অভিযোগ করেছেন যে ওই নেতারা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। বিষয়টি সরেজমিনে অনুসন্ধান করে প্রমাণিত হওয়ায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। তাঁদের চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদে সুপারিশ করা হয়েছে।

কালিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিজেই ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। আমার নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি মেয়র পদে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সময় দিতে পারছি না। কিন্তু নৌকার বিপক্ষে প্রচারণায় অংশ নিইনি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে কোথায়ও কথা বলিনি। ফেসবুকে দেখলাম বহিষ্কার হয়েছি।’

কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক বলেন, ‘নৌকার বিপক্ষে ভোট চেয়েছি, তা যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন, তবে রাজনীতি ছেড়ে দেব। নৌকার কাজ করার জন্য কেউ ডাকেননি, তা ছাড়া পারিবারিক কাজে ব্যস্ত আছি। তাই নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার সুযোগ হয়নি। আমাকে কারণ দর্শানোও হয়নি।’

জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, ‘কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রেজুলেশন করে তাঁদের বহিষ্কারের সুপারিশ করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। চূড়ান্ত বহিষ্কারে জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হয়েছে।’

৩০ জানুয়ারি কালিয়া পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহিদুজ্জামান (হীরা)। আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র ফকির মুশফিকুর রহমান। তিনি কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক। এ ছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি এস এম ওয়াহিদুজ্জামান (মিলু)।