দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দিতে লাখ টাকা চান জেলা আ.লীগ নেতা

প্রতীকী ছবি

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দিতে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক এক লাখ টাকা চেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের মনোনয়নপ্রত্যাশী সজল মুখার্জীর কাছে ফজলুল হক এই টাকা চেয়েছেন। এ–সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে।

সজল মুখার্জী সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

সজল মুখার্জী বলেন, ‘মনোনয়নে তদবির করার জন্য আমার কাছে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এক লাখ টাকা দাবি করেন। তবে আমি তাঁকে টাকা দিইনি। তাঁকে টাকা না দেওয়ায় আমি নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছি। আমি দলের একজন ত্যাগী কর্মী। নিজের বাড়ি না করে দলীয় অফিস নির্মাণ করেছি। আমি মনে করি, আমি নৌকা প্রতীক পাওয়ার একমাত্র যোগ্য প্রার্থী ছিলাম।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘চাইছি তো কী হয়েছে। সে টাকা দিয়েছে কি না, সেটা দেখেন।’ সজল মুখার্জীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলে ফজলুল বলেন, ‘আমাকে সে টাকা দেয়নি।’

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি করোনার সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহম্মেদ। পদ শূন্য হওয়ার পর চলতি বছরের ২ জুন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক চিঠিতে জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ কে ফজলুল হককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক ও ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জীর ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে কথোপকথন ছিল এমন—
ফজলুল: ‘হ্যালো’
সজল: ‘চাচা, কেমন আছেন?’
ফজলুল: ‘এই আল্লাহ রেখেছে।’
সজল: ‘সজল মুখার্জী বলছিলাম।’
ফজলুল: ‘সজল, কী বলো ? কী করতেছ কী?’
সজল: ‘এই তো আছি, আপনি বেরোবেন কটায়?’
ফজলুল: ‘আমি তো বেরোব একটায়।’
সজল: ‘বেলা একটায়?’
ফজলুল: ‘হু’
সজল: ‘আচ্ছা আচ্ছা, শরীলটরিল ভালো আছে তো?’
ফজলুল: ‘হ্যাঁ, যাচ্ছে। তুমি কি কোনো ব্যবস্থা করতে পারো নাই?’
সজল: ‘চাচা, কত দিতে হবে, চাচা?’
ফজলুল: ‘আমি তো একের কথা বলছিলাম, তা দেখো।’
সজল: ‘এক লাখ।’
ফজলুল: ‘হ্যাঁ’
সজল: ‘আমার সব রেডি করে দিতে পারবেন তো চাচা?’
ফজলুল: ‘ইনশা আল্লাহ, যদি ওপর আল্লাহ সহায় থাকে, তাহলে হবে।’
সজল: ‘আচ্ছা আচ্ছা, আমি ঢাকায় আছি, আপনি আসেন।’
ফজলুল: ‘ওপরে, আল্লাহর ওপরে ভরসা করো।’
সজল: ‘হ্যাঁ হ্যাঁ’
ফজলুল: ‘তুমি এখন ঢাকায় নাকি?’
সজল: ‘হ্যাঁ, আপনি ঢাকায়। আসেন, আমি দেখা করবানি।’
ফজলুল: ‘তুমি আমার নাম্বারে যোগাযোগ রেখো, আমি রাত্রি-সন্ধ্যার মধ্যে পৌঁছে যাব ইনশা আল্লাহ।’
সজল: ‘আচ্ছা আচ্ছা, চাচা, ঠিক আছে।’