কেন্দ্রের নাম বাঁশগাড়ি পূর্বপাড়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসাকেন্দ্র। বুথের সংখ্যা পাঁচটি। একটি সড়কের পাশেই তৈরি করা হয়েছে ডেকোরেটর থেকে আনা পর্দা টানিয়ে। দুটি বুথ করা হয় আগের দিন তৈরি করা অস্থায়ী একটি টিনশেডের ভেতর। বাকি দুটির স্থান মাদ্রাসাটির পুরোনো একটি ভবনে। আর প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বসার স্থান করা হয়েছে মসজিদের ভেতর।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের কেন্দ্রগুলোর মধ্যে বাঁশগাড়ি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা একটি। আজ রোববার সকালে ভোট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রটির ভেতর ও বাইরের কোথাও শৃঙ্খলা ধরে রাখা যায়নি। এমনকি ভোট দিতে হচ্ছে অনেকটা খোলা স্থানে, সবার সামনে। ফলে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে ভোটারদের গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রুপা বেগম নামের এক ভোটার বলেন, ‘দাঁড়ানোর জায়গা নাই, আবার গোপনীয়তা। ভোট দিলাম সবার সামনেই।’
বেলা পৌনে ১টার দিকে কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে কোথাও এতটুকু জায়গা নেই। ৫ নম্বর বুথটি করা হয় ডেকোরেশন থেকে ভাড়া করে আনা পর্দা দিয়ে। ওই বুথটির দৈর্ঘ্যে ১২ ফুট, আর প্রস্থে ১০ ফুট হবে। ছোট্ট এই বুথটির দুই পাশে লম্বা বেঞ্চ পেতে বসেছেন প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টরা। আছেন দুজন পোলিং কর্মকর্তা আর একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। ভেতরে গিয়ে বোঝার উপায় নেই কারা ভোট নিচ্ছেন, আর কারা ভোট দিচ্ছেন। ভোট দেওয়ার জন্য পর্দা টানানো হলেও জায়গাটি এতই ছোট দাঁড়ানোর অবস্থা নেই। সেই কারণে অনেক ভোটার সবার সামনে ব্যালট পেপার রেখেই ভোট দিচ্ছেন।
৫ নম্বর বুথের চার ফুট দূরে ৩ ও ৪ নম্বর বুথ। ভোটের এক দিন আগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এসে পুরোনো টিন দিয়ে শেড নির্মাণ করে বুথ দুটি করা হয়। ওই দুটি বুথেও একই অবস্থা।
৫ নম্বর বুথের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন আবুল বাশার মো. নোমান। শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতির জন্য ভোট বুথের ভেতর ও বাহির দায়ী।
স্থানীয় লোকজন জানান, বাঁশগাড়ি পূর্বপাড়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসাকেন্দ্রটি চালু হয় ১৯৯৬ সালে। প্রতিবারই ডেকোরেশন থেকে পর্দা এনেই বুথ করা হয়। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার জন্য স্থান রাখা হয় মসজিদের ভেতর। নির্বাচন পরিচালন সংশ্লিষ্টদের রাত্রিযাপন করতে হয় মসজিদে।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবু সায়িদ বলেন, ‘মসজিদের ভেতর আমার জায়গা। দুপুরের আজান হওয়ার পর নামাজের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হয়। লোকজন এসে আমাকে খুঁজে পায় না। থাকতে হয়েছে মসজিদে। এই রকম সুযোগ–সুবিধায় কেন্দ্র করে ভালোভাবে ভোট সম্পন্ন করা বড় চ্যালেঞ্জ।’