দাউদকান্দি-ঢাকা পথে ৫০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। বাস না পেয়ে অবশেষে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে তিনি ২০০ টাকা ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন। বললেন, ৫০ কিলোমিটার পথ। সাধারণত এই পথ যেতে ৫০ টাকা বাস ভাড়া নেয়। ধর্মঘটের কারণে বাস নেই, কিন্তু অফিস তো খোলা। এখন ২০০ টাকা দিয়ে হলেও যেতে হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফাঁকা। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন জরুরি কাজে ঘর থেকে বের হওয়া যাত্রীরা। উপায় না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়ায় মাইক্রোবাস, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাত্রীরা গন্তব্যে যাচ্ছেন। এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু খোলা থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।
কুমিল্লার চান্দিনার বল্লারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলিনা রানী সরকার বলেন, দাউদকান্দি থেকে চান্দিনায় যেতে ১০০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। তিন গুণের বেশি নেওয়া হচ্ছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি ও টাকার অপচয়—দুটোই হচ্ছে।
লাকসামের নাঙ্গলকোটের রাজমিস্ত্রি মিন্টু মিয়া বলেন, তিনি হোমনা সদরে কাজে এসেছিলেন। তাঁর ছেলে কয়েক দিন ধরে অসুস্থ। নিরুপায় হয়ে তিনি বাড়িতে রওনা দিচ্ছেন। কিন্তু সড়কে কোনো যান না থাকায় তিনি দীর্ঘক্ষণ ধরে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছেন বলে জানান।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। কমপক্ষে পাঁচজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধর্মঘটের কারণে দুদিন ধরে কোনো আয়-রোজগার নেই। খুব কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
সড়কে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে দাউদকান্দি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করতে পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।