দাউদকান্দিতে দেড় কিলোমিটারজুড়ে যানজট

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ঢাকা-গৌরীপুর-হোমনা সড়কে তীব্র যানজট চলছে। আজ রোববার সকাল ১০টায় আঙ্গাউড়া এলাকা থেকে ছবিটি তোলা।
ছবি: আবদুর রহমান ঢালী

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গৌরীপুর বাজার পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কে আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে তীব্র যানজট চলছে। আজ গৌরীপুর বাজারে হাটের দিন হওয়ায় এবং ইচ্ছেমতো এলোপাতাড়িভাবে যানবাহন চলাচলের কারণে ঢাকা-গৌরীপুর-হোমনা সড়কে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে পরিবহনের যাত্রী ও চালকেরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বেলা দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই সড়কে তীব্র যানজট ছিল।

দাউদকান্দি উপজেলার সবজি ব্যবসায়ী চরমাহমুদ্দী গ্রামের বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন এবং তিতাস উপজেলার শোলাকান্দি গ্রামের গোলাম মোস্তফা সকাল সাড়ে নয়টায় আঙ্গাউড়া গ্রামের কাছে যানজটে আটকে ছিলেন। তাঁরা জানান, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমশার বাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার সবজি কিনে পিকআপে করে গৌরীপুর বাজারের উদ্দেশ্যে সকাল সাতটায় রওনা দেন। সকাল আটটার মধ্যে গৌরীপুর বাজারে পৌঁছার কথা থাকলেও দীর্ঘসময় যানজটে আটকে রয়েছেন। আজ সবজি বিক্রির জন্য পাইকারদের আর পাবেন না বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ঢাকা থেকে হোমনাগামী সুপার সার্ভিসের বাসের চালক শাহজাহান মিয়া এবং হোমনা থেকে ঢাকাগামী সুপার সার্ভিসের বাসের চালক আবুল হোসেন সকাল ১০টায় আঙ্গাউড়া গ্রামের কাছে সড়কে যানজটে আটকে ছিলেন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাঁরা একই জায়গায় আটকে ছিলেন।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আঙ্গাউড়া গ্রামের আবদুর রহিম ও পেন্নাই গ্রামের মোজাম্মেল হক বলেন, সড়কের দেড় কিলোমিটার অংশে সংস্কারকাজ করতে গিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে যানবাহনগুলো বিশৃঙ্খলভাবে চলাচল করছে। ফলে তাঁদের ভাড়া কম জোগাড় হচ্ছে। মালিককে ৫০০ টাকা জমা দিয়ে দিনে এক শ থেকে দেড় শর বেশি টাকা থাকছে না।


গৌরীপুর ইউনিটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মো. মাহিম ও গৌরীপুর বাজারের ব্যবসায়ী শ্যামল রায় বলেন, সড়কে যানজট পরিস্থিতিতে হেঁটে চলাচলও মুশকিল হচ্ছে।
কুমিল্লা থেকে গৌরীপুর বাজারগামী প্রাণ কোম্পানির পিকআপের চালক মোহাম্মদ মিয়া ও মাইক্রোবাসের চালক জামাল উদ্দিন বলেন, এ সড়কে ঢুকতে এবং বের হতে দুই থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগছে। প্রায় দুই মাস ধরে এ অবস্থা চলছে। নিয়ম না মেনে যানবাহন চলাচলের কারণে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

‘পেটের দায়ে এ সড়কে রিকশা চালাতে আসি। কিন্তু আশা পূরণ হচ্ছে না। শুধু শৃঙ্খলার অভাবে নিয়মিত যানজট লাগে।’
মোশাররফ হোসেন ,রিকশাচালক


মলয় গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পেটের দায়ে এ সড়কে রিকশা চালাতে আসি। কিন্তু আশা পূরণ হচ্ছে না। শুধু শৃঙ্খলার অভাবে নিয়মিত যানজট লাগে।’


দাউদকান্দির পেন্নাই গ্রামের ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, এ সড়ক দিয়ে দাউদকান্দির একাংশ, তিতাস, হোমনা, মেঘনা, বাঞ্ছারামপুর এবং মুরাদনগর উপজেলার একাংশের লোকজন চলাচল করছে। অথচ শৃঙ্খলার অভাবে শত শত যাত্রীকে দেড় কিলোমিটার অংশ হেঁটে-দৌড়ে পার হতে হচ্ছে।

যানজট নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে দাউদকান্দি মডেল থানার গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কের একাংশে খানাখন্দ এবং নিয়ম না মেনে যানবাহন চলাচলের কারণে এ সড়কে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে যানজট নিরসনে গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দুটি দল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে।