দিনাজপুর পৌরসভা: হ্যাটট্রিক জয় চায় বিএনপি

দিনাজপুর পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দিনাজপুর শহরের রামনগর মোড়েপ্রথম আলো

স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেননি আওয়ামী লীগ মনোনীত বা সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী। ফলে অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনে জয়ের জন্য মরিয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী-সমর্থক ও নেতা–কর্মীরা।

অন্যদিকে টানা দ্বিতীয়বার মেয়র পদে জয়লাভ করে ১০ বছর ক্ষমতায় আছেন বিএনপি–সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো অংশ নিয়ে হ্যাটট্রিক করতে চান বিএনপির এই প্রার্থী।

দ্বিতীয় দফায় ১৬ জানুয়ারি ‘ক’ শ্রেণির এ পৌরসভায় নির্বাচন হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাশেদ পারভেজ। তিনি জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি দলের রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও মেয়র পদে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি আহমেদ শফি রুবেল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি মেহেরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে হাবিবুর রহমান রানা।

জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক কামরুল হুদা বলেন, জাতীয় নির্বাচন আর স্থানীয় নির্বাচন দুটো ভিন্ন বিষয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার সুফল পেয়েই জনগণ এবার আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।  
এদিকে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটারদের সঙ্গে গণসংযোগে নেমেছেন বিএনপির প্রার্থীসহ সব অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন বলেন, শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগেরও অনেকেই আছেন, যাঁরা বর্তমান মেয়রকে ভালোবাসেন।  

বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি দলের রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক।

সব পৌর এলাকায় মালার মতোর ঝুলে আছে প্রার্থীদের ছবি আর প্রতীকসংবলিত পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৌরসভার অলিগলিতে মাইকে চলছে প্রচার-প্রচারণা। তবে এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় লোকসংগীতসহ বিভিন্ন গানের মাধ্যমে প্রার্থীদের কাছে ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে। পৌর শহরের দপ্তরীপাড়া, সুইহারি, বালুবাড়ি, কসবা এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা হয়। ভোটাররা বলেছেন, নির্বাচনে বড় দুই দলের প্রার্থীদের মধ্যে লড়াইটা কঠিন হবে।

শহরের দপ্তরীপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলাম (৩৮) বলেন, মেয়র যেই হোক পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেন, ময়লা–আবর্জনা পরিষ্কারের কাজটি নিয়মিত করতে পারবেন, এমন প্রার্থীকেই বেছে নেবেন তাঁরা।  

এদিকে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী নৌকার প্রার্থী রাশেদ পারভেজ বলেন, ‘ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। দলীয় নেতা–কর্মীর বাইরেও সাধারণ মানুষ নৌকার জন্য নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন।’  

বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গত ১০ বছরে মানুষের কাছাকাছি গিয়েছি। পৌর এলাকার মানুষের হাঁড়ির খবর জানি আমি। জয় নিয়ে ভাবছি না।’ সাধারণ মানুষ সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদান করতে পারলে জয়ের বিষয়ে তিনিও শতভাগ আশা প্রকাশ করেন।

প্রচারণায় পিছিয়ে নেই লাঙ্গল, কাস্তে ও হাতপাখার প্রার্থীও
বড় দুই দলের প্রার্থীর পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন লাঙ্গল, কাস্তে ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীও। লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আহমেদ শফি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলাম। সেই সময়ও মানুষ আমাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করেছে। এবার মেয়র পদে দাঁড়িয়েছি। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। মানুষ পরিবর্তন চায়।’ নির্বাচনে জয়ী হলে প্রতিটি ওয়ার্ডে সালিসি বোর্ড, পৌরসভা কর্তৃক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করাসহ পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভা পরিণত করতে চান তিনি।