দিরাইয়ে ইভিএমে ভোট গ্রহণে সময় বেশি লাগছে

ভোট দিতে যাওয়ার আগে কেন্দ্রের বাইরে সিরিয়াল নম্বর মিলিয়ে নেন ভোটাররা। আজ সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রেপ্রথম আলো

সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভায় এবারই প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ হচ্ছে। তবে অনেক ভোটার আগে থেকেই ইভিএমের সঙ্গে পরিচিত না থাকায় কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে বেশি সময় লাগছে।

কেন্দ্রের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদেরও ভোট দেওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

এই পৌরসভায় সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বেলা তিনটা পর্যন্ত সব কটি কেন্দ্র মিলিয়ে ৪০ শতাংশ ভোট গ্রহণ হয়েছে বলে জানান নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার। ভোট গ্রহণ হবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। পৌরসভায় মোট ভোটার ২১ হাজার ৩৭৯ জন।

সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পাঁচটি কেন্দ্র ঘুরে ভোটার, প্রার্থীদের এজেন্ট ও নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও এমনটা জানা গেছে। তাঁরা বলেছেন, অনেক ভোটারকে বোঝাতে হচ্ছে ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হয়। আবার আঙুলের ছাপ নিয়েও সমস্যা হচ্ছে কোথাও কোথাও। এ কারণে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ভালো থাকলেও ভোট গ্রহণে সময় লাগছে বেশি।

অনেক ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে বোঝাতে হচ্ছে। আবার দেখা গেছে, কোনো কোনো ভোটারের আঙুলের ছাপ একাধিকবার দিতে হচ্ছে। এই সমস্যা হচ্ছে বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে।
আবদুর রাজ্জাক, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র

পূর্ব দিরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হুমায়ুন কবির চৌধুরী (৭১) নামের এক ভোটার বলেন, কেন্দ্রের ভেতরে যাওয়ার পর তালিকার সঙ্গে নাম মেলানো, আঙুলের ছাপ দেওয়া, মেশিনের আলাদা আলাদা বোতাম চেপে মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের নির্বাচন করতে সময় বেশি লেগেছে। তবে পদ্ধতিটা ভালো বলে জানান হুমায়ুন কবির।

পৌরসভার চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১১টার দিকে দেখা যায় বাইরে নারী ও পুরুষ ভোটারদের তিনটি করে ছয়টি সারি। একটি কক্ষের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটার পারভিন বেগম বলেন, আধা ঘণ্টা ধরে সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন। মানুষ কক্ষে ঢুকছে কম।

চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে কথা হয় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী রসিদ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, পৌরসভার ১২টি কেন্দ্র তিনি ঘুরেছেন। সব কটিতেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভোট হচ্ছে। তবে ইভিএম সম্পর্কে মানুষের ধারণা কম থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

কেন্দ্রের একটি কক্ষে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সর্দার কামাল হোসেন, বিএনপির প্রার্থীর সিরাজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর এজেন্ট জয়নাল সরদার। তিনজনই একসঙ্গে বসে ছিলেন। তাঁরাও ভোট গ্রহণে বেশি সময় লাগার কথা জানান।

চণ্ডীপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, অনেক ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে বোঝাতে হচ্ছে। আবার দেখা গেছে, কোনো কোনো ভোটারের আঙুলের ছাপ একাধিকবার দিতে হচ্ছে। এই সমস্যা হচ্ছে বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৪৩৪ জন। বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয় ১৬ শতাংশ।

এই পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আটজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের বিশ্বজিৎ রায়, বিএনপির ইকবাল হোসেন চৌধুরী, জাতীয় পার্টির অনন্ত মল্লিক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের লোকমান আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাররফ মিয়া, এম আবদুল কাইয়ূম, সফিকুল ইসলাম ও রশিদ মিয়া। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে ৩৫ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।