দুই কারণে হতাশ, দল ছাড়ার ঘোষণা কাদের মির্জার সহযোগীর

নোয়াখালী জেলার ম্যাপ

দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী। রোববার সন্ধ্যায় বসুরহাটের কলেজ রোডের একটি চায়ের দোকানে বসে এ ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে ইস্কান্দারকে বলতে শোনা যায়, কোম্পানীগঞ্জে চলমান অসুস্থ রাজনীতি এবং সেতুমন্ত্রীর পা ধরেও ছেলের চাকরি না হওয়ার হতাশা থেকে এই সিদ্ধান্ত।

ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। তিনি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। কাদের মির্জা সম্প্রতি নিজের ভাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং দলের নানা বিষয় নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে আলোচনায় আসেন। বিষয়টি নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ তথা নোয়াখালীর রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে।

ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বসুরহাটের কলেজ রোডের নিজের বাড়িসংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে যান। সেখানে বসে তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দল থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা উল্লেখ করেন, কোম্পানীগঞ্জে চলমান অসুস্থ রাজনীতি ও ছেলের চাকরি না হওয়ায় হতাশা থেকে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে যে গুলি ও বোমাবাজির রাজনীতি কোম্পানীগঞ্জে চলছে, তাতে তিনি অভ্যস্ত নন। তাই তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরীর বক্তব্যের ভিডিওটি অল্প সময়ের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে তাঁকে আক্ষেপ করে বলতে শোনা যায়, সুস্থ-সুন্দর রাজনীতি করে তিনি কোনো মূল্যায়ন পাননি। ওবায়দুল কাদেরের কাছে দুইবার গিয়েছেন। তাঁর পা ধরে কেঁদেছেন। তবু ছেলেটার চাকরি হয়নি। কথাগুলো বলতে গিয়ে ইস্কান্দার হায়দার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ানোর পর কাদের মির্জা তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোষণা করেন। যদিও ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান কমিটিতে তিনি জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির দায়িত্ব পান।

রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দল থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন দল করেও কোনো মূল্যায়ন পাইনি। তা ছাড়া বর্তমানে বসুরহাটে গুলি ও অস্ত্রের রাজনীতি চলছে, তাতে আমি অভ্যস্ত নই। তাই আগে থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’