দুই পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত

প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার বরুড়ায় দুই পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার শিলমুড়ি উত্তর ইউনিয়নের জীবনপুর হাশেম মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম জহিরুল ইসলাম (৩৪)। তিনি বরুড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। জহিরুল পৌরসভার জিনসার এলাকার প্রয়াত আবদুল মালেকের ছেলে। তাঁর আট বছরের এক ছেলে রয়েছে।

নিহত জহিরুলের স্বজন, এলাকাবাসী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরুড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জিনসার এলাকার পাশের শিলমুড়ি উত্তর ইউনিয়নের জীবনপুর গ্রাম। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় জীবনপুর গ্রামের হাশেম মার্কেটের একটি চা–দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন জহিরুল ইসলাম। এ সময় জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জীবনপুর গ্রামের মো. আবাদ মিয়ার ছেলে মাসুদ মিয়া (৩২) এবং একই এলাকার শিব্বির আহমেদের পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। তখন জহিরুল ইসলাম দুই পক্ষের মারামারি থামাতে যান। এ সময় মাসুদ ছেনি দিয়ে জহিরুলের মাথায় কোপ দেন। আরও কয়েকজন লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। মারামারিতে একই এলাকার সাহেব আলীর ছেলে মো. রানা (৩৩), মুকসুদ আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেনও (২৮) আহত হন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিত্সক জহিরুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর হামলায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ।

জোবায়ের হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। করোনার কারণে যেতে পারেননি। অন্যের মারামারি, ঝগড়া থামাতে গেলে তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’ তাঁর ভাই উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। এ ঘটনায় জোবায়ের হোসেন বাদী হয়ে মাসুদকে প্রধান আসামি করে বরুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। মামালা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জহিরুল ইসলামের মা জোহরা বেগম জানান, তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে জহিরুল সবার বড়। জহিরুলের আট বছরের একটি ছেলে আছে। কয়েক বছর আগে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জহিরুলের বিচ্ছেদ হয়। এখন ছেলেটি বাবাকেও হারাল। তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। পাশাপাশি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, জহিরুল দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য বলা হয়েছে।