দুই মাসের মেয়েকে একজনের কোলে রেখে গেলেন চিকিৎসকের কাছে, ফিরে দেখেন নেই

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, এক নারী দুই মাসের শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন
ছবি: সংগৃহীত

দুই মাসের শিশু তায়বাকে নিয়ে ঠান্ডাজনিত চিকিৎসার জন্য আজ বুধবার সকালে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান মা সীমা খাতুন। বহির্বিভাগে বেশ ভিড় দেখে তিনি অপরিচিত এক নারীর কাছে মেয়েকে রেখে চিকিৎসকের কক্ষে যান।

ফিরে এসে ওই নারীকে আর দেখতে পাননি তিনি। মেয়েকে হারিয়ে হাসপাতাল চত্বরে বিলাপ করতে থাকেন তিনি। সকাল ৮টা ২০ থেকে ২৪ মিনিটের মধ্যে শিশু চুরির ঘটনাটি ঘটে।

সীমা খাতুন উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের তফিজ উদ্দিনের স্ত্রী। শিশু তায়বা ছাড়াও মারুফ (১৪) ও মাহমুদা (১০) নামের দুই সন্তান আছে এই দম্পতির। দুই মাস আগে এই হাসপাতালেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তায়বার জন্ম দিয়েছিলেন সীমা। সেই হাসপাতালেই মেয়েকে হারিয়ে কান্না আর থামছিল না তাঁর।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম শিশু চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে শিশু চুরির ঘটনা এটাই প্রথম। হাসপাতালে নিয়মিত রোগীর পাশাপাশি হাম-রুবেলার টিকাদান ক্যাম্পেইন চলার কারণে অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় লোকজন বেশি ছিল।

হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত নারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, কালো বোরকা পরা মুখ ঢাকা, গায়ে চাদর জড়ানো ও ভ্যানিটি ব্যাগ হাতে মধ্যবয়সী এক নারী সকাল ৮টা ২২ মিনিটে চুরি যাওয়া শিশুকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।

শিশু তায়বা

মা সীমা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, সরল বিশ্বাসে তিনি মেয়েকে অপরিচিত ওই নারীর কাছে রেখে নিজে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি যেভাবেই হোক তাঁর মেয়েকে ফেরত চান।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সীমার স্বামী তফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা নারীকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সীমা খাতুনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শিশু নিয়ে পালানো ওই নারীকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ওই নারীর মুখ ও শরীর বোরকায় ঢাকা থাকায় তাঁকে শনাক্ত করতে সময় লাগছে। তবে দ্রুততম সময়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।