দুজন গ্রেপ্তার, মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতার বাড়িতে কিশোরকে রাতভর আটকে মারধরের ঘটনায় আজ রোববার মামলা হয়েছে। এতে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন পান্টি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার মিস্ত্রির ছেলে শুকুর আলী ও একই ওয়ার্ডের মোসলেম মোল্লার ছেলে তাইজাল মোল্লা। অন্য দুই আসামি হলেন ডাবলু মোল্লার ছেলে মো. রানা ও মো. আনোয়ারের ছেলে মো. রয়েল। তাঁরা সবাই রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা।

বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে। মামলার বাদী ও পরিবারের সদস্যদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মামুনুর রশীদ, পরিদর্শক (তদন্ত), কুমারখালী থানা

স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বুরুরিয়া গ্রামের সমসেন আলীর ছেলে কামরুজ্জামান (১৪) বোনের বাড়ি যাচ্ছিল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সে রাজাপুর গ্রামের মসজিদের সামনে পৌঁছায়। সেখান থেকে তাকে শুকুর, রানা, তাইজাল ও রয়েল মোটরসাইকেলে করে ধরে নিয়ে যান। কামরুজ্জামানকে শুকুরদের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। সেখানে কামরুজ্জামানকে রড ও গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এরপর মুক্তিপণ দাবি করে ফজরের নামাজের সময় তার পরিবারকে ফোন দেওয়া হয়। তার চাচা মো. বাদশা ও মো. সোহেল দ্রুত সেখানে যান।

কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাকে ছাড়িয়ে নিতে শুকুর ৫০ হাজার দাবি করেন। না দিলে কামরুজ্জামানকে মেরে ফেলা বা মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। বাধ্য হয়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে কামরুজ্জামানকে নিয়ে যান তাঁরা চাচারা। ভয়ে তাঁরা বিষয়টি পুলিশকেও জানাননি।

এ নিয়ে শনিবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘আ.লীগ নেতার বাড়িতে কিশোরকে রাতভর পেটানোর অভিযোগ’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। একই ঘটনা নিয়ে আজ প্রথম আলোর ছাপা সংস্করণেও সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তখন পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর আজ সোহেল চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

সোহেল বলেন, ‘প্রথমে ভয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানাইনি। এখন বিচারের আশায় মামলা করেছি।’

জানতে চাইলে কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুনুর রশীদ বলেন, মামলার আগেই এসপির কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আসামিদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালানো হয়। পরে মুক্তিপণের টাকা উদ্ধারসহ প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে। মামলার বাদী ও পরিবারের সদস্যদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।