দুর্গন্ধে সুরমার পাড়ে হাঁটা দায়

নগরে নদীর পাড়ের ৯টি স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ রয়েছে। এসব স্থান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অসচেতন কিছু লোক এ কাজ করছে।

সিলেট নগরের তোপখানা এলাকা থেকে কানিশাইল পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটারে সুরমা নদীর পাড়ের ৯টি স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এসব স্থান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি তোলা।ছবি: প্রথম আলো

সিলেট শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে সুরমা নদী। নগরের তোপখানা এলাকা থেকে কানিশাইল পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটারে নদীর পাড়ের ৯টি স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। পাড় থেকে ময়লা নদীতে পড়ে দূষিত হচ্ছে পানি। ময়লার স্তূপ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। এতে নদীর তীরের বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সকাল ও বিকেলে যাঁরা নদীর তীরে হাঁটাহাঁটি করেন, তাঁরাও দুর্গন্ধে টিকতে পারছেন না।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এলাকার মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ নদীর পাড়ে পচা ও উচ্ছিষ্ট খাবার, কলার কাঁদি, প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের খালি প্যাকেটসহ নানা ধরনের আবর্জনা ফেলে। এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের তোপখানা, কাজিরবাজার, শেখঘাট, ডহর, কলাপাড়া ও কানিশাইল এলাকায় নদীর পাড়ের ৯টি স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ রয়েছে। ডহর ও কলাপাড়া এলাকায় নদীর পাড়ে ময়লা ফেলার জন্য প্লাস্টিকের পাত্র থাকলেও লোকজন সেগুলোতে তেমন ময়লা ফেলছেন না। হাতের নাগালেই ময়লা ফেলার পাত্র থাকার পরও নদীর পাড়েই যত্রতত্র তাঁরা আবর্জনা ফেলছেন।

কলাপাড়া এলাকার গৃহিণী মানসুরা আক্তার জানান, ডায়াবেটিস থাকায় প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে তিনি নিয়মিত নদীর পাড় ধরে হাঁটাহাঁটি করেন। কিন্তু বাসা থেকে বের হলেই তাঁর চোখে পড়ে আবর্জনার স্তূপ। বাতাস থাকলে দুর্গন্ধ বাড়ে। ফলে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলা করতে পারেন না।

কলাপাড়া এলাকার আরও কয়েকজন বলেন, বাসাবাড়ির লোকজনদের চেয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নদীর পাড়ে বেশি আবর্জনা ফেলেন। নদীর পাড়ে দিনের পর দিন আবর্জনা পড়ে থাকলেও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয় না।

ডহর ও কলাপাড়া এলাকার দুই বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে বলেন, নদীর পাড়ে প্লাস্টিকের যেসব পাত্র বসানো হয়েছে, সেগুলো আকারে অনেক ছোট। ময়লা ফেলার ওই পাত্রে শুধু শুকনো ময়লা যেমন খাবারের প্যাকেট, বোতল, প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যাগ ফেলা যায়। তাই বাসা ও দোকানের বর্জ্য সেসব পাত্রে না ফেলে নদীর পাড়ে নিয়ে ফেলা হয়।

সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান বলেন, নদীর পাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে স্থানীয়দের প্রায়ই সচেতন করা হয়। কেউ যেন ময়লা ফেলে নদী দূষণ না করেন, সে জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে। এমনকি মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে ময়লা ফেলার দায়ে জড়িতদের জরিমানাও করা হয়। এরপরও ময়লা ফেলা থামছে না। আবারও সেখানে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি চালানো হবে।

সুরমা নদী তীরের ডহর, কলাপাড়া ও কানিশাইল এলাকা তিনটি পড়েছে সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তারেক উদ্দিন তাজ প্রথম আলোকে বলেন, অনেকেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছে ময়লা না দিয়ে নদীর তীরে নিয়ে ফেলছেন। এটি দুঃখজনক। বারবার নদীর পাড়ে ময়লা না ফেলার জন্য স্থানীয়দের সচেতন করা হয়। বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের জন্য ভাবা হচ্ছে।