দুর্ঘটনা এড়াতে গোলচত্বরের দাবি

দুর্ঘটনা এড়াতে গোলচত্বরের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। রশিদপুর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর
প্রথম আলো

পরনে সাদা কাপড়। মাথায় সাদা কাপড়ের টুকরা। একে অপরের হাত ধারাধরি করে গোলচত্বরের মতো করে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন তাঁরা। এরপর তাঁরা অবস্থান ও সমাবেশ করে ঘোষণা করেন পাঁচ দফা।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুর বাঁক এলাকায় গত শুক্রবার ভোরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় স্থানটি দুর্ঘটনাপ্রবণ দাবি করে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা এভাবেই বিক্ষোভ করেছে ‘সচেতন বিশ্বনাথ সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি সংগঠন। এ বিক্ষোভে এলাকাবাসী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও একাত্ম হন।

কর্মসূচির আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তিন উপজেলার মিলনস্থল রশিদপুরে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানে একটি গোলচত্বর প্রয়োজন। এ দাবিতে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে কর্মসূচি পালন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে রশিদপুরে গোলচত্ত্বর ও স্প্রিডব্রেকার নির্মাণ, সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, সড়কবাতি স্থাপন ও সড়ক বিভাজকের মাধ্যমে পৃথক লেন সৃষ্টি এবং দূরপাল্লার বাসে দুজন করে চালক দিয়ে গাড়ি চালানো।

কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করে নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন ও এলাকাবাসী একাত্ম হন। এর মধ্যে মানবসেবা রক্তদান সমাজকল্যাণ ফাউন্ডেশন, মানবতার ঘর, বিশ্বনাথ ইসলামী সংস্থা, রাজ সংগীতালয় এবং বাচাঁও হাওর আন্দোলন ব্যানার প্রদর্শন করে একাত্মতা পোষণ করে।

সচেতন বিশ্বনাথ সমাজকল্যাণ সংস্থার আহ্বায়ক মো. ফজল খানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবদুল বাতেনের সঞ্চালনায় কর্মসূচি চলার সময় বক্তব্য দেন নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আবদুল করিম চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, বাচাঁও হাওর আন্দোলনের আহ্বায়ক সাজিদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহতথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বিভাংশু গুণ, চাউলধনী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আলতাব হোসেন, বিশ্বনাথ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক মিয়া।

বক্তারা বলেন, সিলেটের বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের রশিদপুরের ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দুর্ঘটনা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে লাশের সারি দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

সড়ক যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে সরকার প্রচার করলেও সিলেটে এখনো দুরবস্থায় আছে উল্লেখ করে সমাবেশ থেকে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন হয়নি। এতে রশিদপুরসহ দেশের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলোতে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। আর একেকটি পরিবারের সব স্বপ্ন এ সড়ক দুর্ঘটনার মাধ্যমে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।

গত শুক্রবার ভোরে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের রশিদপুরে সিলেটমুখী লন্ডন এক্সপ্রেস ও ঢাকামুখী এনা পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই বাসচালক, এক চিকিৎসকসহ আটজন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন যাত্রী।