দুর্বল সেজে সাহায্য চাইতেন, করতেন শ্লীলতাহানি

শ্লীলতাহানির অভিযোগে বৃদ্ধকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায়
ছবি: প্রথম আলো

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাজশাহীতে ৬২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভিডিওতে ওই বৃদ্ধকে এক নারীর শ্লীলতাহানি করতে দেখা যায়।

গতকাল রোববার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর আজ সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ খবর পেয়ে এক তরুণী নগরের বোয়ালিয়া থানায় বৃদ্ধের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।

বৃদ্ধকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে বোয়ালিয়া মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর পুলিশ। সেখানে বৃদ্ধের পরিচয়ে বলা হয়েছে এনামুল হক। বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। তবে তিনি রাজশাহী নগরের একটি এলাকায় ভাড়া থাকেন। পুলিশ বলেছে, এনামুল হকের পরিবারে স্ত্রী-সন্তান আছেন। তিনি তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন না।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ভিড়ের মধ্যে ভিক্ষাবৃত্তির নামে এক ব্যক্তি নারীদের গায়ে হাত দিচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও গতকাল ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তা পুলিশের নজরে আসে। এরপরই ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর হয়। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আজ ভোরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

গোলাম রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, ‘ভিক্ষাবৃত্তির নামে ওই বৃদ্ধ অনেক দিন ধরেই এমন কাজ করে আসছিলেন।’ পুলিশ মাঝে এমন অভিযোগও পায়। কিন্তু কাউকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর শনাক্ত করা সহজ হয়।

এদিকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে এক তরুণী এনামুল হকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় একটি মামলা করেছেন। গতকাল ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লেও মামলার এজাহারে ওই তরুণী বলেছেন, ভিডিওটি গত বছর ২৮ ডিসেম্বরের। এই বৃদ্ধ তাঁকে শ্লীলতাহানি করেছিলেন।

মামলার এজাহারে তরুণী বলেছেন, ঘটনার দিন শহরের এক স্থানে বৃদ্ধ তাঁকে বলেছিলেন হাঁটতে পারছেন না। ওই তরুণী সাহায্য করতে গেলে তাঁকে নাজেহাল হতে হয়। সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। গতকাল ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর তরুণী বৃদ্ধকে চিনতে পারেন। আর গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুনে থানায় এসে মামলা করেন।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বৃদ্ধের পরিবারে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে চলেন। আর বৃদ্ধ নগরে ভিক্ষা করে হোটেলে ভালো খাওয়াদাওয়া করেন। চিকিৎসার কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, গুরুতর কোনো অসুখও নেই তাঁর।

ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ভিক্ষা করার জন্য বৃদ্ধ এনামুল দুর্বল সেজে থাকতেন। থানায় আনার পর তাঁকে বেশ সবল মনে হয়েছে। আজ তাঁকে আদালতে নেওয়া হবে।