দুর্ভোগের নতুন সঙ্গী ভাঙা সেতু, বিকল্প পথে যানজট

গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল বন্রাধ খা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে টঙ্গী সেতুতে
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলমান ঢাকা বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ভোগান্তির সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে টঙ্গী সেতু। সেতুটির মাঝখান থেকে পলেস্তারা খসে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এ সেতু দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে সেতুটি বন্ধের পর নতুন নির্মিত বেইলি সেতু বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু বেইলি সেতুটি সরু ও এটির ধারণক্ষমতা কম থাকায় চলাচলে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিভিন্ন সময় সেতুর পিলার ও স্ল্যাবে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর আগেও সেতুর পলেস্তারা খসে পড়েছে। কিন্তু তারপরও সেতুটি মেরামতের কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

তুরাগ নদের ওপর দুটি সেতু আছে। সেতু দুটি অনেকের কাছে টঙ্গী সেতু আবার অনেকের কাছে আবদুল্লাহপুর সেতু নামে পরিচিত। বিআরটি প্রকল্পের কাজের অংশ হিসেবে ময়মনসিংহগামী সেতুটি আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে নতুন করে ঢাকামুখী সেতু ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে সেতুটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

আজ দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকাগামী সেতুর পলেস্তারা খসে সেতুর ঠিক মাঝ বরাবর ভেঙে গর্তের মতো সৃষ্টি হয়েছে। গর্তের চারপাশ বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আরও দু-এক জায়গায় ভাঙন থাকায় লোহার পাত বসানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুটি দীর্ঘদিনের পুরোনো। বিভিন্ন সময় সেতুর পিলার ও স্ল্যাবে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর আগেও সেতুর পলেস্তারা খসে পড়েছে। কিন্তু তারপরও সেতুটি মেরামতের কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

আগামী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই মেরামতের কাজ শেষ হবে। তখন এই সেতু দিয়েই পুনরায় যান চলাচল করবে
মহিরুল ইসলাম, পরিচালক (এলিভেটেড অংশ), বিআরটি প্রকল্পের

আবদুল্লাহপুর মোড়ের একটি বাস কাউন্টারের মাস্টার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগেই সেতুতে ভাঙন ছিল। তার ওপর লোহার পাত বসিয়ে যান চলাচল চালু রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন বড় ভাঙন দেখা দেওয়ায় হঠাৎ যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের দায়িত্ব বিআরটি প্রকল্পের।

বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক (এলিভেটেড অংশ) মহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে সেতুটি মেরামতের উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই মেরামতের কাজ শেষ হবে। তখন এই সেতু দিয়েই পুনরায় যান চলাচল করবে।

ঢাকা থেকে বের হতে হচ্ছে বিকল্প পথে

টঙ্গী সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় এখন আর ঢাকা থেকে বের হয়ে আগের মতো টঙ্গী বাজার যাওয়ার সুযোগ নেই। ঢাকা থেকে গাজীপুর বা ময়মনসিংহগামী যানবাহনগুলোকে এখন কামারপাড়া সড়ক হয়ে যেতে হচ্ছে। অর্থাৎ, ময়মনসিংহগামী গাড়িগুলো কামারপাড়া সেতু পার হয়ে মন্নুগেট এলাকায় এসে পুনরায় ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে যুক্ত হচ্ছে।

আবার ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের যানবাহনগুলোও কামারপাড়া সেতু পার হয়ে টঙ্গী বাজার হয়ে বেইলি সেতু দিয়ে ঢাকায় ঢুকছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিকল্প পথে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

পথ পরিবর্তন হওয়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া, কামারপাড়া থেকে মন্নুগেট, টঙ্গী স্টেশনরোড, টঙ্গী বাজার এলাকা ঘুরে ব্যাপক যানজট দেখা যায়। হঠাৎ যানজট বাড়ায় এসব সড়কে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও গাড়ির চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

জানতে চাইলে আবদুল্লাহপুর পুলিশ বক্সের পরিদর্শক মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, হঠাৎ রুট পরিবর্তন হওয়ায় যানজট বেড়েছে। তারপরও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেতু মেরামত না হওয়া পর্যন্ত যানবাহনগুলোকে এভাবেই চলতে হবে।