দেবীদ্বারে দেবরের হামলায় ভাবির মৃত্যু, আহত ৩

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কুমিল্লার দেবীদ্বারে দেবরের হামলায় সাহেনা বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন
প্রতীকী ছবি

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলি গ্রামে দেবরের হামলায় সাহেনা বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই বৃদ্ধার দুই ছেলে ও এক পুত্রবধূ আহতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় দুপুরে সাহেনা বেগমের পুত্রবধূ মোসা. আসমা বেগম বাদী হয়ে চাচাশ্বশুর বজলুর রহমানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং দু–তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এর মধ্যে বজলুর রহমানের ছেলে মো. হ‌ুমায়ূন কবিরকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ যেভাবে আমার চাচা বজলু মেম্বর তাঁর দলবল নিয়ে আমার মাকে হত্যা করেছেন, তেমনিভাবে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরেই ৩৩ বছর পূর্বে দেয়ালচাপায় আমার বাবাকে হত্যা করেছিলেন। আমি আমার মা–বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই।
তারেকুল ইসলাম, নিহতের ছেলে

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফুলতলি গ্রামের প্রয়াত মফিজুল ইসলামের দুই ছেলে তারেকুল ইসলাম ও জসিমউদ্দিনের সঙ্গে তাঁর চাচা মো. বজলুর রহমান ওরফে বজলু মেম্বরের দেড় শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে বজলু মেম্বর তাঁর সমর্থকদের নিয়ে জোরপূর্বক নতুন ঘর ওঠাতে গেলে তারেকুলের পরিবার বাধা দেয়। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় তারেকুল ইসলাম (৪২), তাঁর মা সাহেনা বেগম (৬৫), তারেকুল ইসলামের স্ত্রী আসমা বেগম (২৫) ও ভাই জসিম উদ্দিন (২৫) গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তারেকুল, তাঁর মা সাহেনা বেগম ও স্ত্রী আসমাকে দ্রুত উদ্ধার করে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সাহেনা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

চিকিৎসাধীন তারেকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ যেভাবে আমার চাচা বজলু মেম্বর তাঁর দলবল নিয়ে আমার মাকে হত্যা করেছেন, তেমনিভাবে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরেই ৩৩ বছর পূর্বে দেয়ালচাপায় আমার বাবাকে হত্যা করেছিলেন। আমি আমার মা–বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই।’

আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। আমি তাঁর বাবাকে মারিনি। মা এমনিতেই মারা গেছেন। তবে জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে এ কথা সত্য।
বজলুর রহমান, অভিযুক্ত

এ বিষয়ে বজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। আমি তাঁর বাবাকে মারিনি। মা এমনিতেই মারা গেছেন। তবে জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে এ কথা সত্য।’

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত চারজন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেলে মারা যান এক নারী। কাল রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে। ওই ঘটনায় নিহত নারীর পুত্রবধূ বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন, যা হত্যা মামলায় পরিণত হবে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।