দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
প্রথম আলো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সরাসরি পুলিশ বাহিনী নিয়ে তৃণমূলে চলে গেছে। দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এ জন্য সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশন ও সরকার দায়ী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ সারা দেশে বেশকিছু ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ছিল। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো দখল করে নিয়েছে। তারা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিরোধী দলের যাঁরা এজেন্ট ছিলেন, তাঁদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। তারা ব্যালটে সিল মেরে তাদের মতো করে ভোট নিয়ে গেছে। আমরা বিকেল চারটায় খবর পেয়েছি, প্রায় সব কটি নির্বাচনী এলাকায় একই ঘটনা ঘটেছে।’

সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচন সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনেরা আগের রাতে যেভাবে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরেছিল, এসব নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছে। এসব জায়গায় সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করে ভোটের ফলাফল তাদের পক্ষে নিয়ে গেছে। ২০১৪ সালের পর ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রশ্ন হচ্ছে, ভোটের আয়োজন কেন? আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তনে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে।’ তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন শুধু ব্যর্থই নয়, তাদের যোগ্যতাই নেই। আজ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আবারও প্রমাণ হলো আওয়ামী লীগ বা দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ অবস্থায় নির্বাচন না করলে বিএনপি আর কী করতে পারে। আমরা নির্বাচন করছি, নির্বাচনের অনিয়মগুলো নিয়ে রাজপথে নামছি। আমরা জনগনকে সঙ্গে নিয়ে এই নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানাতে চাই বলেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’

আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতার জন্য বিএনপির নেতৃত্বের পদত্যাগ করা উচিত—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার ওবায়দুল কাদের সাহেবের নেই। নেতৃত্বের পদত্যাগ চাইতে পারেন আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা। পায়ের নিচে মাটি নেই এবং জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন বলেই ওবায়দুল কাদের সাহেবেরা এসব কথা বলেন।’

মঙ্গলবার মির্জা ফখরুলের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমীন, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহের, অর্থবিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।