দোতলার সানশেড থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার

আজ শুক্রবার সকালে নাটোর সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের দোতলার সানশেড থেকে এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত অবস্থায় জন্মের পর ওই নবজাতককে তার মা জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

নাটোর সদর থানা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে নাটোর সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের সানশেডে এক নবজাতকের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করলেও তার মা–বাবার সন্ধান পায়নি। দিনভর অনুসন্ধানের পর দুপুরে পুলিশ জানতে পারে, মৃত নবজাতকটি ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগী সুইটি বেগমের।

‘মেন্টাল অ্যাংজাইটি’ সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া সুইটি বেগমকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, তিনি সবার অগোচরে গভীর রাতে সন্তান প্রসব করেন। প্রসবের পর শিশুটিকে মৃত দেখতে পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক তাকে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেন।
নাটোর সদর থানার জংলি এলাকার ওই নারী জানান, তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তাই অন্তঃসত্ত্বা হলেও তিনি প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি না হয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। রাতে হঠাৎ করে মৃত সন্তান প্রসব হওয়ায় তিনি কাউকে না বলে তাকে বাইরে ফেলে দেন।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে। তদন্তে ওই নবজাতকের মাকে মানসিক রোগী বলে মনে হয়েছে। মৃত অবস্থায় প্রসব হওয়ায় নবজাতকটিকে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। কারও অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই নবজাতকটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক কে এম আনছারুল হক জানান, ওই মা সবার অগোচরে হাসপাতালের টয়লেটের ভেতর মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে তিনি নিজেই শিশুটিকে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেন এবং টয়লেট ধুয়েমুছে পরিষ্কার করেন।

এ ঘটনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত কর্মীরা কেন জানতে পারল না, জানতে চাইলে সহকারী পরিচালক বলেন, ওই মা গভীর রাতে ঘটনার সময় কোনো শব্দ করেননি। এ ছাড়া টয়লেট পরিষ্কার করে রাখায় কারও নজরে আসেনি।

ওই রোগীকে প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি না করে মেডিসিন ওয়ার্ডে কেন ভর্তি করা হয়েছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভর্তির সময় রোগী অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানাননি। তিনি মেন্টাল অ্যাংজাইটিতে ভুগছিলেন। তাই তাঁকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।