দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে সব ফেরি চালু, স্বস্তিতে ফিরছেন মানুষ

দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌপথে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে অধিকাংশ ফেরি চালু থাকায় ঘাট সংকটে পড়ছে ফেরি। দীর্ঘ সময় ঘাট না পাওয়ায় যাত্রীরা এভাবে ঝুঁকি নিয়ে নামতে বাধ্য হন।এম রাশেদুল হক।

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে এ পথে ১৬টি ফেরির সব কটি চালু রাখা হয়েছে। অধিকাংশ ফেরি চালু থাকায় মাঝেমধ্যে ঘাট সংকটে পড়ছে ফেরি। এমনকি ঘাট না পাওয়ায় দীর্ঘ সময় আশপাশে নোঙর করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সব কটি ফেরি চালু থাকায় এইপথে যাতায়াতকারী সবাই স্বস্তিতে গন্তব্যে ফিরছেন।

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে মানুষ যে যেভাবে পারছেন, গন্তব্যে ছুটে চলছেন। অনেকে খোলা ট্রাকে করে পরিবারসহ রওনা করেছেন। এ ছাড়া প্রতিটি ফেরিতে মানুষ এবং ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা অধিকাংশ ফেরিতে এমন চাপ দেখা যায়। বিপরীতে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন বা যাত্রী চাপ না থাকায় হাতে গোনা কিছু গাড়ি নিয়েই ফেরিগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, আগের নিয়মেই ফেরি চালু রাখা হয়েছে।

আজ সকালে দীর্ঘক্ষণ দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায়, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। প্রতিটি ঘাটে তিন-চারটি ফেরি নোঙর অবস্থায় আছে। পাটুরিয়া থেকে যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে আসা ফেরি দৌলতদিয়ায় ঘাট না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাঁচ-ছয়টি গাড়ি নিয়েই ফেরিগুলো পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। এ সময় যাতায়াতকারী অধিকাংশ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেন।

বরিশাল থেকে খুব সকালে সাহ্‌রি খেয়ে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে রওনা করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদসহ সাতজন। ফেরি বন্ধ থাকায় সবাই দুশ্চিন্তায় ছিলেন। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার খবর পেয়ে আজই বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেন তাঁরা।

সকাল আটটার দিকে আলাপকালে নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘সাহ্‌রি খেয়ে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে জনপ্রতি ৫০০ টাকায় দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছি। ঘাটে এসে দেখি, অনেক ফেরি। ভাবছি, পাটুরিয়া ঘাটে নেমেই একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে সবাই রওনা হব।’

ঢাকার একটি পটারি হাউসের স্বত্বাধিকারী সোয়েব হাসান ঈদ করতে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী। আলাপকালে তিনি বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার পর বাড়ির উদ্দেশে রওনা করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য একটি প্রাইভেট কার ঠিক করে রেখেছিলাম। রাতেই খবর পেলাম ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। পরে রাতে রওনা না করে সকালে রওনা হই। রাস্তা-ঘাট মোটামুটি ফাঁকা পেলাম। সরকারের এ সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া উচিত ছিল। ফেরি ও গণপরিবহন বন্ধ করায় মানুষ যেভাবে পারাপার হলো, তাতে আরও বেশি করে করোনা সঙ্গে নিয়ে গেল।’

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগের নিয়মে ফেরি চালু রেখেছি। সবার আগে অতিজরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করব। এ সময় ফেরি যাতে খালি না যায়, এ জন্য সঙ্গে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য গাড়ি পার হতে পারবে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি সন্ধ্যা ছয়টা থেকে স্বাভাবিক নিয়মে পারাপার হবে।’