দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন

গতকাল শুক্রবার সকালে পদ্মা নদীর ভাঙনকবলিত দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট এলাকা
ছবি: এম রাশেদুল হক

রাজধানীর সঙ্গে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন ও যাত্রী পারাপার হয়। প্রতিবছর ভরা বর্ষায় ভাঙন দেখা দিলে ঘাট দিয়ে যাতায়াতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এ বছর বর্ষার আগেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি দেখতে শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।

আজ শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট রক্ষায় বালুভর্তি বস্তা ফেলেছে বিআইডব্লিউটিএ। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে অনেক স্থানে এসব বস্তা ধসে পড়ছে। আরও ধসে পড়ছে নবনির্মিত ৭ নম্বর ইউটিলিটি ফেরিঘাটের দুই পাশের কাঁচা মাটি। ভারী বৃষ্টিতে প্রায় ১০০ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই যানবাহন ফেরিতে ওঠানামা করছে।

ফেরিঘাট এলাকার দুলাল মণ্ডল ও আলমগীরসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন, বর্ষা এলেই ভাঙন ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ তোড়জোড় শুরু করে। শত শত বালুভর্তি বস্তা ফেলে। বর্ষা শেষে শুষ্ক মৌসুম এলেই সবকিছু ভুলে যায়। তখন কোনো ধরনের তৎপরতা দেখা যায় না। এটা জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।

শুক্রবার বিকেলে ফেরিঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক, সংস্থাটির সদস্য পরিকল্পনা ও যুগ্ম সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী মো. মহিদুল ইসলাম, পরিচালক (বন্দর) মো. ওয়াকিল নেওয়াজ, নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দীন পাঠান প্রমুখ। ভাঙন পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।

পদ্মা নদীর ভাঙনকবলিত দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আজ শনিবার সকালে তোলা
ছবি: এম রাশেদুল হক

নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দীন পাঠান বলেন, দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট থেকে ৭ নম্বর ফেরিঘাটের দূরত্ব ১ হাজার ৭০০ মিটার বা দেড় কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে লঞ্চঘাটসহ ছয়টি ফেরিঘাট আছে। ২, ৩, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ভাঙন দেখা দিলে জরুরি মেরামতের অংশ হিসেবে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট অংশে ২১ মে থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়। ৭ নম্বর ঘাট এলাকায় ভাঙন বেশি দেখা দিলে শুক্রবার থেকে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম বলেন, আগে থেকে ভাঙন প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভরা বর্ষা মৌসুমে ঘাটগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।

দৌলতদিয়া ঘাট থেকে দেবগ্রাম পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধে সম্প্রতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত নদীশাসনের দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সী। তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নদীশাসনের কাজ শুরু করতে না পারলে এবারও ভাঙনে অনেক অংশ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।