দ্রব্যমূল্য নিয়ে বিএনপির আন্দোলন শোভা পায় না: কৃষিমন্ত্রী

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। আজ দুপুরে সরকারি কলেজ মাঠে
ছবি: সংগৃহীত

দ্রব্যমূল্য নিয়ে বিএনপির আন্দোলন, অনশন শোভা পায় না মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। পত্রপত্রিকা ও রেকর্ড থেকে প্রমাণ দিয়ে বলতে পারি, তাদের শাসনামলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে প্রতিবছর মঙ্গা হয়েছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন মানুষ না খেয়ে থেকেছে।’

আজ শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জোটের আমলে আশ্বিন-কার্তিক মাসে প্রায় প্রতিদিনই মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। অন্যদিকে গত ১৩ বছর আওয়ামী লীগের আমলে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে এমন খবরও আসেনি। ইনশা আল্লাহ আর কোনো দিন আসবে না। আওয়ামী লীগের আমলে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে না।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি জোট, তথাকথিত সুশীল সমাজ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার অপচেষ্টা করছে। ১৯৭৪ সালে এ অপশক্তি কুড়িগ্রামের বাসন্তীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জাল পরিয়ে দুর্ভিক্ষের অপপ্রচার ছড়িয়ে বিশ্বে দেশের ও বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছিল। তেমনি বিএনপিসহ এই অপশক্তি দ্রব্যমূল্য নিয়ে গুজব ও অপপ্রচার ছড়াতে চাচ্ছে। ক্ষমতার জন্য ‘বাসন্তী প্লট’ তৈরি ও তা প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ সুযোগ তারা আর পাবে না, দেশের মানুষ আর বিভ্রান্ত হবে না।

কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও দেশে খাদ্যের কোনো সংকট ও হাহাকার নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সম্প্রতি কিছু পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু খাদ্যের কোনো সংকট নেই। দেশে খাদ্য নিয়ে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যার জন্য অনশন, মানববন্ধন বা হরতাল করতে হবে। গত দুই মাস মোটা চালের দাম বাড়েনি। পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী, কৃষকেরা এখন দাম বাড়াতে চাপ দিচ্ছেন। আলুর দামও কম, কৃষকেরা দাম বাড়াতে চাপ দিচ্ছেন। রোজা শুরু হচ্ছে, বেগুনের দাম স্থিতিশীল। তারপরও সরকার মানুষের কষ্ট লাঘবে কম মূল্যে এক কোটি পরিবারকে নিত্যপণ্য দেওয়াসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মঙ্গার দেশ থেকে খাদ্য রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, দেশের মানুষ যখন এগিয়ে যায়, বিশ্বের মানুষ যখন স্বীকার করে, বাংলাদেশ উন্নয়নে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বিএনপি-জামায়াত কুচক্রীরা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গুজব রটনা, মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করে। দেশ ও দেশের বাইরে তাদের প্রভুদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করে দেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হারুনার রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন নাহার, সদস্য রিয়াজুল কবীর কাওছার, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।