ধনুর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেমি ওপরে
চার দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নেত্রকোনার ছয়টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল তৃতীয়বারের মতো প্লাবিত হয়েছে। খালিয়াজুরিতে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যায় অন্তত ১৫টি ইউনিয়নে ২ হাজার ১২০ হেক্টর জমির আমন ধানের চারা তলিয়ে গেছে। ১১৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
জেলা কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত নেত্রকোনায় কখনো থেমে কখনো টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টির পানি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এখানকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। খালিয়াজুরিতে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে নেত্রকোনা-সিধলী সড়কের রাজাপুরসহ কিছু এলাকা, কলমাকান্দা সদর, রংছাতি, লেঙ্গুরা, বড়খাপন, কৈলাটি, পোগলা ও খারনৈ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এতে পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে কলমাকান্দা, বারহাট্টাসহ কয়েকটি উপজেলায় প্রায় ১১৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। গত দুবারের বন্যায় এ জেলায় ৩ হাজার ৪০৯টি পুকুরের মাছ ভেসে যায়। ৩ হাজার ১৭৭ জন খামারের মালিক প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েন।
খালিয়াজুরিতে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনো অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা বলেন, তিনি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কিছু আমনের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতি কম হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছর ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এর মধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়। পানি বাড়ায় প্রায় ২ হাজার ১২০ হেক্টর জমির আমন ধানের চারা পানির নিচে রয়েছে।
পাউবোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, খালিয়াজুরিতে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনো অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নেত্রকোনা সদর, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, মদন ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১২ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।