ধরমপাশায় বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ, রক্ষা পেল স্কুলছাত্রী

বাল্যবিবাহ
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক স্কুলছাত্রী (১৪) বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসির হাসানের হস্তক্ষেপে ওই ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ হয়।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর সঙ্গে পাশের গ্রামের এক তরুণের (২৪) বিয়ের আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছাত্রীটির বাড়িতে তার গায়েহলুদের অনুষ্ঠান হয়। স্থানীয় একজনের কাছ থেকে এ বিয়ের খবর পান ইউএনও মুনতাসির হাসান।

ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের ( ইউপি) চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসাইনকে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। ইউপি চেয়ারম্যান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিয়েটি বন্ধ করতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুস ছাত্তারকে ওই ছাত্রীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ইউপি সদস্য সেখানে গিয়ে বাল্যবিবাহ আয়োজনের সত্যতা পান। পরে মেয়েটির বাবা ও মা এবং তাঁদের স্বজনদের বাল্যবিবাহের কুফল ও রাষ্ট্রীয় আইনে এ বিয়ের কোনো স্বীকৃতি নেই, এমনটি বুঝিয়ে বলার পর মেয়েটির মা–বাবা ও তাঁদের স্বজনেরা বিয়েটি বন্ধ করতে সম্মত হন। ১৮ বছরের আগে তাঁরা ওই ছাত্রীকে বিয়ে দেবেন না বলে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বরসহ বরযাত্রী কনের বাড়িতে আসার কথা ছিল। প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতার কারণে বর পক্ষ আর আসেনি।

ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘মেয়েডা দেখতে হুনতে বড় অইছিল। তাই বিয়া দেওনের আয়োজন করছিলাম। ১৮ বছর না অইলে মেয়ের বিয়া দেওন যাইতো না, এইডা আমার জানা আছিইন না।’

ইউএনও মুনতাসির হাসান বলেন, বাল্যবিবাহ সামাজিক ব্যাধি। রাষ্ট্রীয় আইনে এ ধরনের বিয়ের কোনো ধরনের স্বীকৃতি নেই। থানা-পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীটির বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।