ধর্ষণ মামলার আসামি শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবি শিক্ষার্থীদের

ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবিতে রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আইএইচটির প্রধান ফটকের সামনে।
ছবি: প্রথম আলো

নাটোরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তরুণীকে (২০) ধর্ষণের মামলায় কারাগারে থাকা শিক্ষককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আইএইচটির প্রধান ফটকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা জানিয়েছেন, একই দাবিতে কাল বুধবার তাঁরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেবেন।

ওই শিক্ষকের নাম মো. আতিয়ার রহমান ওরফে মুকুল (৩৮)। তিনি আইএইচটির ডেন্টাল বিভাগের প্রভাষক। তাঁর বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামে।

মেয়েটির স্বজনেরা আতিয়ারকে আটকে রেখে পুলিশে দেন। এ ঘটনায় বাঘা থানায় মেয়েটি মামলা করেন।

এজাহার থেকে জানা যায়, তিন মাস আগে ঘটকের মাধ্যমে বিয়ে করার জন্য ওই তরুণীকে দেখতে যান আতিয়ার। পরে আতিয়ার তাঁর ভাবিকে দিয়ে মেয়েটির মুঠোফোন নম্বর নেন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৩০ ডিসেম্বর বাঘার চণ্ডীপুর এলাকায় মেয়েটির দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান আতিয়ার।

সেখানে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন আতিয়ার। এ ঘটনার পর বিয়ের কথা বললে আতিয়ার পরে বিয়ে করার কথা বলেন। পরে মেয়েটির স্বজনেরা আতিয়ারকে আটকে রেখে পুলিশে দেন। এ ঘটনায় পরদিন বাঘা থানায় মেয়েটি মামলা করেন। ওই দিনই আতিয়ারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এরপর আতিয়ারকে বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন আইএইচটির শিক্ষার্থীরা।

ওই শিক্ষক যেহেতু ফৌজদারি মামলায় হাজতে রয়েছেন, তাঁর বিষয়ে চাকরিবিধি অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
ফারহানা হক, অধ্যক্ষ, আইএইচটি

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন আইএইচটির শিক্ষার্থী গাফফার আলী, কে এস সাইমন, ইমরান হোসেন, সাবেক শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান প্রমুখ। তাঁরা বলেন, আতিয়ার বিভিন্ন সময় নারী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে উত্ত্যক্ত করতেন। কিন্তু শিক্ষাজীবনের কথা ভেবে কেউ এর প্রতিবাদ করেননি। আইএইচটি রাজশাহীর স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এখানে আতিয়ারের মতো শিক্ষক থাকতে পারেন না। আইএচটির শিক্ষার্থীরা কোনো ধর্ষকের কাছে পড়তে চান না। তাই তাঁকে দ্রুত এ প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করতে হবে।

জানতে চাইলে আইএইচটির অধ্যক্ষ ফারহানা হক বলেন, ওই শিক্ষক যেহেতু ফৌজদারি মামলায় হাজতে রয়েছেন, তাঁর বিষয়ে চাকরিবিধি অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কোনো শিক্ষার্থী অভিযোগ করেননি। ১২ ডিসেম্বর থেকে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। এ জন্য তাঁকে ৩০ ডিসেম্বর কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।