ধর্ষণের পর কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা: যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

বরিশালে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবু আজাদ শামীম আসামির উপস্থিতিতে আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রায় ঘোষণা করেন।

একই ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ওই যুবকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড এবং সোনার চেইন চুরির দায়ে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম দণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম সায়েম আলম (২৫)। তিনি ঢাকার ওয়ারী থানা এলাকার সেলিম আলমের ছেলে।
এ মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামি বরিশালের হোটেল ফেয়ার স্টারের ব্যবস্থাপক মজিবর রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফয়জুল হক।

ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, ওয়ারী থানার যোগীনগর রোডের বাসিন্দা সেলিম আলমের ছেলে সায়েম আলমের সঙ্গে বরিশাল নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক কলেজছাত্রীর ফেসবুকে পরিচয় ও পরে প্রেম হয়। ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট অভিযুক্ত সায়েম বরিশালে আসেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কোচিং সেন্টারে না গিয়ে বরিশাল নগরের হোটেল ফেয়ার স্টারে যান ওই ছাত্রী। সেখানে ভাড়া করা একটি কক্ষে সায়েম আলম তাকে ধর্ষণের পর তার গলায় থাকা সোনার চেইন নিয়ে পালিয়ে যান।

এরপর অভিমানে ওই হোটেলকক্ষেই আত্মহত্যা করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। এদিকে কোচিং থেকে মেয়ে ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেও পাচ্ছিল না তার পরিবার। পরে কোতোয়ালি থানা–পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারে, নগরের হোটেল ফেয়ার স্টারে এক ছাত্রীর লাশ পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে নিজের মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন বাবা।

ওই দিনই কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সায়েম আলম, হোটেল ফেয়ার স্টারের মালিক আবদুর রব মিয়া ও ব্যবস্থাপক মজিবর রহমানকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। আট মাস তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ হোটেলমালিক আবদুর রব মিয়াকে অব্যাহতি দিয়ে দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এ মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেন আদালত।