চিরিরবন্দরে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী কিশোরীর কন্যাসন্তান প্রসব

নবজাতক
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ধর্ষণের পরে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সেই বাক্‌প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৫) কন্যাসন্তান প্রসব করেছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নিজ বাড়িতে সন্তান প্রসব করে সে। বর্তমানে দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে মা ও নবজাতক।

বাক্‌প্রতিবন্ধী ওই কিশোরীর চাচি বলেন, ‘ভোরে প্রসব বেদনা ওঠে। মুখে কথা না বলতে পারলেও সে গোঙাচ্ছিল। স্থানীয় এক ধাত্রীর মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করে। এরপরেই মেয়েটির অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাই আমরা তাকে দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’

দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পারভেজ সোহেল বলেন, দুপুরে নবজাতকসহ প্রসূতি এক কিশোরী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। নবজাতক সুস্থ আছে। তবে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা দুর্বল। তাকে রক্ত ও স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

গত ২১ আগস্ট রাতে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরী বমি করতে থাকে। চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে মেয়েটির পরিবার জানতে পারে, ওই কিশোরী ২১ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।

চলতি বছরের ২১ মার্চ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। প্রতিবেশী সুমিত্রা রানীর বাড়ি থেকে ওই কিশোরী হাতে পরনের প্যান্ট নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে আসে। পরিবারের লোকজন তাকে জিজ্ঞাসা করলে বাক্‌প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে কিছু বলতে পারে না। পরে মেয়ের মা সুমিত্রা রানীর বাড়িতে গেলে সেখানে শয়নকক্ষে দিপু চন্দ্র রায়কে দেখতে পায়। সুমিত্রা রানীকে প্রতিবন্ধী মেয়ের কান্নার কারণ জানতে চাইলেও সুমিত্রা রানী মেয়ের মাকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন এবং কারও কাছে অভিযোগ না করতে হুমকি দেন।

গত ২১ আগস্ট রাতে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরী বমি করতে থাকে এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা চলে। চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে মেয়েটির পরিবার জানতে পারে, ওই কিশোরী ২১ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।

এ ঘটনার পরদিন কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে দিপু চন্দ্র রায়সহ চারজনকে আসামি করে চিরিরবন্দর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশ অভিযোগ আমলে নিয়ে ওই রাতেই আসামি দিপু চন্দ্র রায়কে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

এ বিষয়ে চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বলেন, মেয়েটির বাবার করা ধর্ষণ মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অন্য আসামিরা পলাতক। এখনো মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।