ধলই চা–বাগান খোলার নোটিশ, কাজে যোগ দেননি শ্রমিকেরা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলই চা-বাগান কর্তৃপক্ষ আজ শনিবার থেকে বাগান খুলে দেওয়ার নোটিশ দিলেও কাজে যোগ দেননি চা-শ্রমিকেরা। তাঁরা বলছেন, শ্রমিকদের নামে করা মামলা প্রত্যাহার ও ‘বিতর্কিত’ ব্যবস্থাপককে বদলি না করা পর্যন্ত তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না।

গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় আকস্মিক নোটিশ দিয়ে ধলই চা-বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল বাগান কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন ও বেশ কয়েক দফা আলোচনা শেষে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ৩৩ দিন ধরে বাগানটি বন্ধ রয়েছে। কয়েক দিন ধরে শ্রম অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের মধ্যে আলোচনা চললেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এরই মধ্যে ২৮ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় নোটিশ দিয়ে শনিবার থেকে চা-বাগান খোলার সিদ্ধান্ত জানায় বাগান কর্তৃপক্ষ। তবে শনিবার সকালে বাগানের কোনো শ্রমিক কাজে যোগ দেননি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলই ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে কাজ চলাকালে বেআইনিভাবে গত ২৭ জুলাই ধলই চা-বাগান বন্ধ ঘোষণা করেছিল ধলই চা-বাগান কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ১৭ আগস্ট মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাংসদ এম এ শহীদের উদ্যোগে বৈঠক হয়। বৈঠকের নির্দেশনামতে ১৯ আগস্ট থেকে চা-বাগান খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে বাগানের ‘বিতর্কিত’ ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম রাতেই বাগানে প্রবেশ করেছিলেন। পরদিন ধলই চা-বাগান কোম্পানির সহকারী মহাব্যবস্থাপক খালেদ মঞ্জুর খানের বাগানে প্রবেশ করা নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেখানে দুজন নারী চা-শ্রমিক লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সহকারী মহাব্যবস্থাপককে লাঞ্ছিত করে তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙেছিলেন। এ নিয়ে ২২ আগস্ট খালেদ মঞ্জুর খান একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে কমলগঞ্জ থানায় হামলা, ভাঙচুর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা করেছিলেন। এসব কারণে ৩৩ দিন ধরে বাগান বন্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধলই চা-বাগানের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে নোটিশ দিয়ে শনিবার থেকে ধলই চা-বাগান খোলা হয়। শনিবার সকালে ধলই চা-বাগানের অফিস খুলে মাস্টারিংয়ের কাজ করতে চাইলে চা-শ্রমিকেরা কাজ করতে দেননি। শ্রমিকেরাও কাজে যোগ দেননি। তবে তিনি জেনেছেন, ব্যবস্থাপককে অপসারণ ও মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

এ সম্পর্কে কথা বলার চেষ্টা করেও শনিবার শ্রম অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।