ধুনটে করোনাকালে আগের ব্যস্ততা নেই খাঁচি কারিগরদের

বগুড়ার ধুনট উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের বাঁশ শিল্পের কারিগরেরা খাঁচি তৈরি করছেন
প্রথম আলো

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় করোনার প্রভাব পড়েছে বাঁশ দিয়ে খাঁচি তৈরির কারিগরদের ওপর। প্রতিবছর রমজান মাসে লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিকেরা তাঁদের পণ্য পরিবহনের জন্য বাঁশের খাঁচি ব্যবহার করলেও লকডাউনের কারণে এবার তেমনটা হয়নি। ফলে এখানকার কারিগরেরা অনেকটাই কর্মহীন অবস্থায় আছেন। নেই আগের মতো ব্যস্ততা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি দোকানে লাচ্ছা সেমাই পরিবহনের জন্য ব্যবহার হয় বাঁশের তৈরি খাঁচি। বিগত বছরে কারিগরেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাঁশের খাঁচি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। খাঁচির কারিগরেরা ঈদের বাজার মাথায় রেখে কাজ করতেন। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে যুক্ত থাকতেন। এবার লকডাউনের কারণে সেমাই কারখানার মালিকেরা খাঁচি কিনতে আসেননি। ফলে বেচাবিক্রিও তেমন ছিল না।

ধুনট উপজেলার পাকুড়িহাটা, নলডাঙ্গা, কান্দুনিয়া, দাঁড়াকাটা, চালাপাড়া, বেলকুচি ও বাঁশহাটাসহ ১৫টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবারের আয়ের উৎস বাঁশের তৈরি সামগ্রী। বংশপরম্পরায় বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে পারদর্শী তাঁরা।

নলডাঙ্গা গ্রামের বাঁশ শিল্পের ১০ থেকে ১২ জন কারিগর বলেন, সারা বছর বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করলেও ঈদের আগে তাঁরা খাঁচি তৈরির কাজ বেশি করেন। লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিকেরা ঈদের আগে খাঁচির চাহিদা জানিয়ে দেন। তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী খাঁচি তৈরি করে দেওয়া হয়। এই খাঁচি বিক্রির জন্য হাটবাজারে যেতে হয় না। কারখানার মালিকেরা গ্রামে এসে খাঁচি কিনে নিয়ে যান। কিন্তু করোনাকালে লাচ্ছা সেমাই তৈরির বেশির ভাগ কারখানা ও পরিবহন বন্ধ থাকায় মালিকেরা খাঁচির চাহিদা দিতে আসেননি। খাঁচির চাহিদা না থাকায় তাঁদের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দাড়াকাটা গ্রামের খাঁচি তৈরির কারিগর শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে ঈদ ঘিরে প্রচুর পরিমাণে খাঁচি তৈরি হয়। কিন্তু এবার খাঁচি তৈরির অগ্রিম কোনো আদেশ ছিল না। একজন কারিগর প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি করে খাঁচি তৈরি করতে পারেন। একেকটি খাঁচি বানাতে খরচ হয় ২০-২৫ টাকা। পাইকারি দরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে এ বছর করোনার প্রভাবে খাঁচির চাহিদা কম থাকায় কারিগরদের ক্ষতি হয়ে গেল।