ধুনটে বাল্কহেড জব্দ, সাতজনের কারাদণ্ড

বগুড়ার ধুনট উপজেলা নদী থেকে বালু অভিযােগে জব্দ করা ভাল্কেহড
প্রথম আলো

বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের যমুনার চর থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার প্রথম আলোর শেষ পাতায় ‘ভিটায় ফেরার স্বপ্ন পূরণ হলো না’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর সন্ধ্যায় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত থানা–পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন।

অভিযানে বালু পরিবহনের চারটি বাল্কহেড জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ধুনট উপজেলার রাধানগর গ্রামের সুজাত আলী (২৩), জেল হক (৩৫), বৈশাখী গ্রামের সুমন সরকার (৩২), পারলক্ষ্মীপুর গ্রামের মহাব্বত আলী (৩২), সিরাগঞ্জের তাড়াশের বিলসারা গ্রামের আলাউদ্দিন (৫০), টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়া গ্রামের ঠান্ডু মিয়া (৩৫) ও বেড়িপটল গ্রামের হোসেন আলী (২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে গেছে যমুনা নদী। প্রতিবছর নদীভাঙনে ওই ইউনিয়নের বৈশাখী, রাধানগর, বথুয়ারভিটা, কৈয়াগাড়ি, নিউসারিয়াকান্দি, ভূতবাড়ি, শিমুলবাড়ি, পুকুরিয়া, বানিয়াজানসহ প্রায় ১০টি গ্রামের হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়ে যমুনায় বিলীন হয়েছে। ভাঙনকবলিত এসব গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিয়েছে যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। বাঁধে আশ্রিত এসব মানুষ যমুনার মাছ ও চরে বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ অবস্থায় ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বৈশাখী, রাধানগর ও বথুয়ারভিটা নামের কয়েকটি চরের শত শত একর ফসলি জমি থেকে জোর করে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে উপজেলা যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে সরকারদলীয় লোকজন অবৈধভাবে বালু তুলছেন।

প্রতিদিন তাঁরা প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তুলে বাল্কহেড ও নৌকা দিয়ে পরিবহন করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রি করছেন। তাঁদের ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস নেই ভাঙনকবলিত এসব এলাকার মানুষের। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তাঁরা।

প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত পুলিশের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চারটি নৌকা ও বাল্কহেড জব্দ করেন। সেই সঙ্গে বালু তোলার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেন। আদালতে সহযোগিতায় ছিলেন ধুনট থানার এএসআই ফজলুল হক।

ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, যমুনা নদীর চর কেটে বালু তোলার অভিযোগে চারটি বাল্কহেড জব্দ করা হয়েছে। বালু তোলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ২০১০ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ৪ (খ) ধারা অনুযায়ী ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দিয়ে থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।