নওগাঁয় আরও ৬৪ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যুহীন ২৪ ঘণ্টা

করোনাভাইরাস পরীক্ষা
প্রতীকী ছবি

নওগাঁয় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪২টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এই ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত নতুন কেউ মারা যাননি।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় আরটি-পিসিআর ও র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ৩৪২টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৮৩টি নমুনার আরটি-পিসিআর টেস্টে ৩৫ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ আসে। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ১২ শতাংশ। এ ছাড়া অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে ১৫৯টি নমুনা পরীক্ষায় ২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। নতুন করে সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়ামতপুরের ১৬ জন। এ ছাড়া সদর, পোরশা ও সাপাহারে ৬ জন করে, ধামইরহাট, বদলগাছি ও মান্দায় ৩ জন করে, মহাদেবপুরে ১৪ জন, রানীনগরে ৫ জন, পত্নীতলায় এবং আত্রাইয়ে ১ জন রয়েছেন।

বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিনা মূল্যে অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হচ্ছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার ৩৭২টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত বুধবার ২৯২টি নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। মঙ্গলবার ৪৭২টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ১ থেকে ৫ জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৮৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২৯৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ফোকাল পারসন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, মানুষকে নমুনা দিতে আগ্রহী করতে বিনা মূল্যে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত রবি ও সোমবার উন্মুক্ত স্থানে ক্যাম্প করে পথচলতি মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাতে ১ হাজার ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। এই চিত্র কিছুটা উদ্বেগজনক। বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিনা মূল্যে অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হচ্ছে।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৩ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী আংশিক লকডাউন ছিল। সেটা শেষ হওয়ায় ১৬ জুন পর্যন্ত সাত দিনের বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বৃহস্পতিবার পুলিশ প্রশাসন তৎপর ছিল। ফলে ওই দিন মানুষ কিছুটা বিধিনিষেধ মেনে চললেও শুক্রবার ছুটির দিনে আলগা ভাব দেখা যায়। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নওগাঁ শহরের তাজের মোড়, ব্রিজের মোড়, বাটার মোড় ও বাজার এলাকা ঘুরে মানুষের মধ্যে বিধিনিষেধ মানার কোনো বালাই দেখা যায়নি। এসব এলাকায় যানবাহন চলাচল ছিল প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো। একটি অটোরিকশায় দুজন যাত্রী নিয়ে চলার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। অনেক মানুষের মুখেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজিয়া সুলতানা বলেন, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি না, তা তাঁরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নওগাঁ সদরে ৪টি এবং ১০টি উপজেলায় ২টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছেন। স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে।