নছিমন-করিমনে চড়ে রাজশাহী নগরে ঢোকার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

নছিমন ও করিমনে চড়ে রাজশাহী নগরে আসার দাবিতে রোববার বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। রাজশাহী নগর ভবনের সামনে
সংগৃহীত

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন নির্মাণকাজে নিযুক্ত শ্রমিকেরা ভটভটি, নছিমন ও করিমনে চড়ে শহরে আসার দাবিতে আজ রোববার নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজশাহী নগর ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এ সময় শ্রমিকেরা বলেন, তাঁদের ব্যবহৃত যানবাহনগুলো পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাস্তায় জব্দ করা হচ্ছে। জরিমানা করা হচ্ছে। পরে একজন কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে ওই বিষয়ে আশ্বাস দেওয়ার পর শ্রমিকেরা ফিরে যান।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিকেরা রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কাজে আসেন। তাঁরা সবাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ। অল্প ভাড়ায় যাতায়াতের সুবিধার কারণে তাঁরা তিন চাকার এসব অবৈধ যানবাহন ব্যবহার করেন। সন্ধ্যায় একই বাহনে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। প্রতিদিনই এসব যানবাহনের ওপর ঠাসাঠাসি করে শ্রমিকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে এসব যানবাহনের ব্যাপারে কড়াকড়ি করছে পুলিশ। দুই দিনে জব্দ করা হয়েছে অন্তত ১২টি ভটভটি, টেম্পো ও নছিমন। এর প্রতিবাদেই শ্রমিক ও চালকেরা আজ সকালে কাজে যোগ না দিয়ে নগর ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে এ সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন নগর ভবনে ছিলেন না।

বিক্ষোভ চলাকালে গোদাগাড়ীর ঈশ্বরীপুর গ্রামের ভটভটিচালক আজিজুল ইসলাম বলেন, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তিনি শ্রমিকদের নিয়ে যখন ফিরছিলেন, তখন নগরের লক্ষ্মীপুর মোড়ে তাঁর গাড়িটি পুলিশ জব্দ করে। তাঁকে আড়াই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চার দিন পর গাড়িটি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

নির্মাণশ্রমিক লালন উদ্দিন বলেন, পুলিশ গাড়ি ধরার কারণে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিতে পারছেন না। সে কারণে তাঁরা বিক্ষোভ করছেন। নগর উন্নয়নের কাজে যেসব গাড়ি শ্রমিকদের পরিবহন করবে, সেগুলো জব্দ না করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। এই কর্মসূচির জন্য আজ কোনো শ্রমিক কাজে যোগ দেননি।

শ্রমিকদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে সেখানে যান নগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল মোমিন। তিনি শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন, তাঁদের শহরে ঢোকার ব্যবস্থা করা হবে। তারপর শ্রমিকেরা ফিরে যান।

কাউন্সিলর আবদুল মোমিন বলেন, শ্রমিকেরা না আসতে পারলে তো উন্নয়নকাজও বাধাগ্রস্ত হবে। তাই প্রাথমিকভাবে তাঁদের এসব কথা বলেছেন। যাঁরা সিটি করপোরেশনের কাজের শ্রমিক আনবেন, সেসব চালককে একটা কাগজ দেওয়া হবে। এই কাগজ হস্তান্তর করা যাবে না, গাড়িতে অতিরিক্ত মানুষও তোলা যাবে না। তাহলে পুলিশ ধরবে না। মেয়র ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি আসার পর পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে সব চূড়ান্ত হবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আইন সবার জন্য সমান। তারপরও নগরের উন্নয়নের জন্য জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে কী ব্যবস্থা করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।