নদী খননে পাওয়া ৩ মূর্তি পাহাড়পুর জাদুঘরে হস্তান্তর

তুলসীগঙ্গা নদী খননের সময় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পাথরঘাটায় পাওয়া প্রাচীন আমলের তিনটি মূর্তি পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘরে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন
প্রথম আলো

তুলসীগঙ্গা নদী খননের সময় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পাথরঘাটায় পাওয়া প্রাচীন আমলের তিনটি মূর্তি পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘরে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘরের কাস্টেডিয়ান মোহাম্মদ ফজলুল করিম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তিনটি মূর্তি বুঝে নিয়েছেন।

এ সময় জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মু. রেজা হাসান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোনাববর হোসেন। এর আগে বিকেলে জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা, পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরমান হোসেন, পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টেডিয়ান মোহাম্মদ ফজলুল করিম, আটাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আ স ম আরেফিন চৌধুরী খননকৃত তুলসীগঙ্গা নদীর পাথরঘাটা এলাকা পরিদর্শন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ ডিসেম্বর তুলসীগঙ্গা নদী খননের সময় পাথরঘাটা এলাকায় দুটি কলো পাথরের মূর্তি পাওয়া যায়। পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাসন ওই দুটি মূর্তি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখায় জমা দিয়েছিল। এরপর ৭ জানুয়ারি তুলসীগঙ্গা নদীর একই এলাকায় ১১৪ কেজি ওজনের আরেকটি কালো পাথরের মূর্তি পাওয়া যায়। ওই দিনই পাঁচবিবি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এম আশিক রেজা মূর্তিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখায় জমা দিয়েছিলেন। একই এলাকায় পরপর তিনটি মূর্তি পাওয়ার ঘটনায় জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক ওই এলাকা খনন করা যায় কি না, তা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে জানিয়েছিলেন।

গতকাল প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ও পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টেডিয়ান জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। বিকেলে জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম তাঁদের সঙ্গে নিয়ে তুলসীগঙ্গা নদীর পাথরঘাটা এলাকা পরিদর্শন করেন। এরপর সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখা থেকে তিনটি মূর্তি আনুষ্ঠানিকভাবে পাহাড়পুর জাদুঘরে হস্তান্তর করা হয়।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘরের কাস্টেডিয়ান মোহাম্মদ ফজলুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি মূর্তি তুলসীগঙ্গা নদী খননের সময় পাঁচবিবির পাথরঘাটায় সংরক্ষিত প্রত্নতত্ত্ব এলাকার বাইরে পাওয়া গিয়েছিল। তিনটি মূর্তিই মহামূল্যবান।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক নাহিদ সুলতানা বলেন, ‘প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনযুক্ত এলাকা পাঁচবিবির পাথরঘাটা। আমরা পাথরঘাটায় মূর্তি পাওয়ার স্থানটি পরিদর্শন করেছি। সেখানকার মাটির নিচে আরও পুরাকীর্তি থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই স্থান খনন করার জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।’

জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তুলসীগঙ্গা নদী খননের সময় পাথরঘাটায় তিনটি মূর্তি পাওয়া যায়। মূর্তি তিনটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখায় জমা ছিল। পাহাড়পুর জাদুঘরে ওই তিন মূর্তি হস্তান্তর করা হয়েছে।