নবীগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণের পর উত্তপ্ত ভোটের মাঠ, পরস্পরকে দোষারোপ

নবীগঞ্জে ককটেল বিস্ফোরণের পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তাঁরা বিস্ফোরণের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অংশ খতিয়ে দেখছে
ছবি: প্রথম আলো

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমাবেশ শেষে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনের মাঠ। এ ঘটনায় তিনজন আহত হন। গতকাল রোববার রাতের এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে দোষারোপ করছে।

বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আজ সোমবার পুলিশ ১৭ জনের নামে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০ থেকে ৪৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে। বিএনপি প্রার্থীর দাবি, তাঁর লোকজনকে নির্বাচনের মাঠ থেকে দূরে রাখতে এটা আওয়ামী লীগের কৌশল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত নয়টার দিকে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার নতুন বাজার মোড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম রসুল চৌধুরীর পক্ষে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল। এ সমাবেশ শেষ নেতা-কর্মীরা গন্তব্যে ফিরছিলেন। পথে হঠাৎ পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় লোকজন দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং এ ঘটনায় আহত পৌর এলাকার সালামতপুর গ্রামের নজির মিয়া (৩৬), ভানুদেব গ্রামের শিপন আহমদ (২২) ও প্রজাতপুর গ্রামের তারেক আহমদকে (২৪) উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।

এ ঘটনার পরপরই রাত ১০টায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরীর নির্বাচনী কার্যালয়ে নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেখানে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ লিখিত বক্তব্য বলেন, নৌকার পথসভায় সমর্থকদের উপস্থিতিতে বিএনপি প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। যে কারণে সমাবেশে চোরাগুপ্তা বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন। এতে তাঁদের তিন কর্মী আহত হয়েছেন।

একই দিন রাত সাড়ে ১০টায় শহরের মধ্যবাজার গোল্ডেন প্লাজায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন পৌর বিএনপি। এ সময় বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, নবীগঞ্জ শান্তির শহর। পৌর নির্বাচন ঘিরে মানুষ যখন উৎসবমুখর, ঠিক তখনই আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম রসুল চৌধুরী ও তাঁর দল নির্বাচনী পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলেছেন। বোমা ফাটানোর ঘটনা আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক। ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। যাতে ভোটের দিন উপস্থিতি কম হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপির লোকজন যাতে অংশ নিতে না পারেন, তাই পুলিশ মামলা করেছে। মকবুল নামের একজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আজ ১৭ জনের নামে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০-৪৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মকবুল হোসেন (২৭) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে।