নবীনগরে সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ, থানায় জিডি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী গৌরাঙ্গ দেবনাথ নামের এক সাংবাদিকের হাত-পা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে আজ সোমবার সকালে নবীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।

গৌরাঙ্গ দেবনাথ কালের কণ্ঠের নবীনগর উপজেলা প্রতিনিধি। সাধারণ ডায়েরিতে গৌরাঙ্গ দেবনাথ উল্লেখ করেন, গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মাঝিকাড়া গ্রামের ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী আদালতপাড়ায় তাঁর বাসার সামনে যান। সে সময় গৌরাঙ্গ তাঁর বাসায় রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। সাংবাদিক গৌরাঙ্গের নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করেন স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে নবীনগরে সাংবাদিকতা করতে হলে স্থানীয় সাংসদের (এবাদুল করিম) বিরুদ্ধে কিছু লেখা যাবে না এবং কোনো টক শোতে সাংসদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। তাঁরা চিৎকার করে হুমকি দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে সাংসদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় কিছু লেখা হলে বা টক শোতে কিছু বলা হলে গৌরাঙ্গের হাত-পা কেটে নেওয়া হবে। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে তিনি নবীনগর থানার ওসি আমিনুর রশীদকে ফোনে বিষয়টি জানান। ওসি তাৎক্ষণিক পুলিশ সদস্যদের ঘটনাস্থলে পাঠান। পুলিশ সদস্যরা পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, গত শুক্রবার একটি ভার্চ্যুয়াল টক শোতে নবীনগরের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কথার বলার পর স্থানীয় সাংসদের কয়েকজন অনুসারী তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর শনিবার নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মাঝিকাড়ার বাসিন্দা সুমন উদ্দিন ফেসবুকে সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের পরই রোববার রাতে বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁর হাত-পা কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

নবীনগর উপজেলার আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সুমন তাঁর আত্মীয় সত্য। কিন্তু সুমন সেখানে যায়নি। আর সুমন যদি সেখানে গিয়ে থাকে এবং কেউ যদি এর প্রমাণ দেখাতে পারে, তাহলে সুমনের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাংসদ এবাদুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর নাম জড়িয়ে এসব করে অপদস্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা এই অপকর্ম করেছে, তাদের শাস্তি হোক। পুলিশকে এ বিষয়ে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।