নভেম্বরে ১০১ অন্তঃসত্ত্বা নারীকে স্বাভাবিক প্রসব, তিন নার্সকে শুভেচ্ছা উপহার

২৫০ শয্যার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তিন নার্সকে অভিবাদন ও শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

২৫০ শয্যার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গত নভেম্বর মাসে ১০১ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বাভাবিক প্রসব হয়। স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে উৎসাহিত করায় তিন সিনিয়র স্টাফ নার্সকে শুভেচ্ছা উপহার দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত অক্টোবর মাসে ১০৮ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বাভাবিক প্রসব হয়। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে তাঁদের অভিবাদন ও শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া হয়।

ওই তিন নার্স হলেন সিনিয়র স্টাফ নার্স স্মৃতি রানী রায়, আয়েশা আক্তার ও মর্জিনা বেগম।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে এখানে ৭৬ জন অন্তঃসত্ত্বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। আর ১০১ জন অন্তঃসত্ত্বা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসব করেন। এটি হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগে গত অক্টোবর মাসে এখানে ৮৭ জন অন্তঃসত্ত্বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। আর ১০৮ জন অন্তঃসত্ত্বা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসব করেন। সেটি ছিল হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের সর্বোচ্চ সংখ্যা। গাইনি ও স্ত্রী রোগের জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (সিনিয়র কনসালট্যান্ট) ফৌজিয়া আক্তারের নেতৃত্বে ছয়জন নারী চিকিৎসকের একটি দলের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্সের মধ্যে যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁরা সাধারণ প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের কাজটি করে থাকেন।

গত নভেম্বর মাসে সাধারণ প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স স্মৃতি রানী, আয়েশা ও মর্জিনা ২৮ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রসব করিয়েছেন। তাঁরা তিনজনসহ হাসপাতালের অন্যান্য অভিজ্ঞ সিনিয়র স্টাফ নার্সও সাধারণ প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে অক্টোবর মাসে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে প্রথম হন স্মৃতি রানী রায়, দ্বিতীয় হন আয়েশা আক্তার ও তৃতীয় হন মর্জিনা বেগম। সাধারণ প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবে নার্সদের উদ্বুদ্ধ করতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের শুভেচ্ছা উপহার দিয়ে অনুপ্রাণিত করেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. ওয়াহীদুজ্জামানের কক্ষে তাঁদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেওয়া হয়। এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. ওয়াহীদুজ্জামান, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রানা নুরুস শামস, চিকিৎসক তৌহিদ আহমেদ, ফৌজিয়া আক্তার, আইরিন হক, শারমিন হক দীপ্তি, শারমিন হক স্বর্ণা, ভারপ্রাপ্ত উপসেবা তত্ত্বাবধায়ক গীতা রানী সাহা এবং নার্সিং সুভারভাইজার নারগিস আক্তার ও মমতাজ বেগম, স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি ফেরদৌসী বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্মৃতি রানী রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত অক্টোবর মাসেও স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করানোয় প্রথম হয়েছি। আমরা চিকিৎসকদের সহযোগিতায় অন্তঃসত্ত্বাদের এ বিষয়ে উৎসাহিত করছি। ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

গাইনি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফৌজিয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা। গত অক্টোবর মাসে ১০৮ জন অন্তঃসত্ত্বার স্বাভাবিক প্রসব হয়। হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের সংখ্যা আরও বেশি বাড়ানো সম্ভব। আমরা ছয়জন চিকিৎসকের একটি দল সমপরিমাণে এই কাজ করে যাচ্ছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা রয়েছে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। কিন্তু দালালের দৌরাত্ম্যের জন্য অন্তঃসত্ত্বা রোগীর পরিবারের লোকজন ফাঁদে পড়েন। সচেতন হলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান প্রসবের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে।’