নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি

নরসিংদী সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার বহির্বিভাগ থেকে চুরি হয়ে যাওয়া নবজাতক
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা দুই দিন বয়সী এক নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার বহির্বিভাগ থেকে এই চুরির ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ আমিরুল হক।

চুরি যাওয়া ওই নবজাতক মো. আনিস মিয়া ও সুমাইয়া আক্তার দম্পতির ছেলে। দুই মাস আগে সন্তানসম্ভবা সুমাইয়া আক্তারকে স্বামীর বাড়ি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে নরসিংদীতে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর বাবার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া গ্রামে।

পুলিশ ও ওই নবজাতকের পরিবারের সদস্যরা বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নরসিংদী সদর হাসপাতাল–সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে সুমাইয়া আক্তারের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই নবজাতক ছেলেশিশুর জন্ম হয়। পরে ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দেওয়ায় আজ বেলা ১১টার দিকে ওই নবজাতককে চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর নানি পরীবানু। হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলায় বহির্বিভাগে রোগীর লম্বা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় ছিলেন পরীবানু।

সিরিয়াল এগিয়ে আনার চেষ্টা করার জন্য নবজাতকের নানি পরীবানুকে পরামর্শ দেন পাশে থাকা অজ্ঞাতনামা এক নারী। তাঁর পরামর্শে নবজাতক নাতিকে অজ্ঞাতনামা ওই নারীর কোলে দিয়ে সিরিয়ালের খবর নিতে সামনে এগিয়ে যান পরীবানু। এই সুযোগে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই নবজাতককে নিয়ে উধাও হয়ে যান অজ্ঞাতনামা ওই নারী।

চুরি যাওয়া নবজাতকের নানি পরীবানু বলেন, ‘নরসিংদী সদর হাসপাতালের দোতলায় ডাক্তার দেখাতে আসার পর লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় অজ্ঞাতনামা এক নারী আমার কাছে এসে গল্প জুড়ে দেন। একপর্যায়ে আমার কোল থেকে নবজাতক শিশুটিকে তাঁর নিজের কোলে তুলে নেন। এ সময় “সিরিয়ালটা এগিয়ে আনা যায় কি না” বললে আমি শিশুটিকে তাঁর কোলে রেখেই চিকিৎসকের সহকারীর দিকে এগিয়ে যাই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফিরে এসে নবজাতক নাতিসহ ওই মহিলাকে আর খুঁজে পাইনি। এরপর থেকে ঘণ্টা দুয়েক ধরে হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোর এবং ওয়ার্ডে খুঁজেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।’

পরীবানু আরও বলেন, ‘শিশুটিকে যদি না পাওয়া যায়, তাহলে আমার মেয়ের সংসার নষ্ট হয়ে যাবে। আমি আমার নাতিকে ফিরে পেতে চাই।’ এ সময় তিনি ‘আমার বাচ্চা নাতিডারে ফিরাইয়া দেও, আমার কলিজা ফিরাইয়া দেও’ বলে কান্না করছিলেন।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আরএমও সৈয়দ আমিরুল হক বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে নবজাতক চুরির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা এবারই প্রথম। নবজাতককে উদ্ধার ও অভিযুক্ত ওই নারীকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে পুলিশকে সহযোগিতা করছি।’

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছে। নবজাতক চুরিতে অভিযুক্ত ওই নারীকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।