নলছিটিতে বিবাহিত-অছাত্রদের নিয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের অভিযোগ

নলছিটি থানা সড়কের একটি বাসায় শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা
প্রথম আলো

ঝালকাঠির নলছিটিতে টাকার বিনিময়ে বিবাহিত, অছাত্র, ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও ঢাকায় বাস করা যুবকদের নিয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার নলছিটি থানা সড়কের একটি বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। নতুন আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করা না হলে একে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পাল্টা কমিটি গঠনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ছাত্রদলের নেতা তাইসুর খান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা রয়েছে ২০০৫ সালের আগে এসএসসি পাস কাউকে ছাত্রদলের পদ দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি ছাত্রত্ব নেই ও বিবাহিত এমন কাউকেও রাখা যাবে না কমিটিতে। উপজেলা বিএনপির নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করতে হবে। অথচ জেলা ছাত্রদলের নেতারা টাকার বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে বিবাহিত, ছাত্রত্ব নেই, ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও ঢাকায় বাস করেন, এমন যুবকদের দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছেন। এর পেছনে ঢাকায় বসবাসকারী ঝালকাঠির বাসিন্দা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার ইন্ধন রয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নলছিটি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করেন। সাইদুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও সুজন খানকে সদস্যসচিব করে ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। এতে ৯ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নতুন কমিটির আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি ২০০৩ সালে এসএসসি পাস। রানাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা এ ব্যাপারে প্রত্যায়ন দিয়েছেন। ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ২০০৩ সালে এসএসসি পাস করেন। ৫ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন খান বিবাহিত। ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজুল ইসলাম কখনো ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সুজন গাজী দপদপিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে মঞ্চে দেখা গেছে তাঁকে। নিজের ফেসবুক আইডিতে সেসব ছবিও আপলোড করেছিলেন সুজন। এ ছাড়া কমিটির বেশির ভাগ সদস্য অযোগ্য। অবিলম্বে এ কমিটি বাতিল করা না হলে পাল্টা কমিটি গঠন করা হবে বলে তাঁরা ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা একটি কমিটির সুপারিশ করেছি। কিন্তু তা উপেক্ষা করে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। যাঁরা এলাকায় থাকেন না, যাঁদের কোনো অবস্থান নেই, সে ধরনের লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা যে তালিকা পাঠিয়েছি, তা দিয়েই ছাত্রদলের কার্যক্রম চালাব।’

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস সরদার বলেন, আহ্বায়ক কমিটিতে যোগ্যরা স্থান পেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেসব সঠিক নয়।