নাটোরে পুলিশের বাধায় কার্যালয়েই বিএনপির সমাবেশ, ফেরার পথে হামলার অভিযোগ
নাটোরে পুলিশের বাধায় নিজেদের দলীয় কার্যালয়ের ভেতরেই বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। সমাবেশ শেষে ফেরার পথে ছাত্রদলের দুই নেতাকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় নাটোর শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় জেলা বিএনপি। কিন্তু ভোর থেকেই শহরের আলাইপুরে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রাখে বিপুলসংখ্যক পুলিশ। কোনো নেতা-কর্মী কার্যালয়ের বাইরে বের হতে চাইলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। সকাল ১০টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল কর্মসূচিতে অংশ নিতে এলে তাঁকে কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়। কিন্তু কর্মসূচির জন্য বাইরে বের হতে চাইলে তাঁকেও বাধা দেন পুলিশ সদস্যরা। বাধ্য হয়ে কার্যালয়ের ভেতরে চার দেয়ালের মধ্যেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা সমাবেশ করতে বাধ্য হন।
বিএনপি নেতারা বলেন, ঘরোয়া পরিবেশে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি পালন করে বের হলে পথে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার মুখে পড়েন নেতা-কর্মীরা। শহরের আলাইপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আনাম আহম্মেদকে ও তেবাড়িয়া এলাকায় একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান, যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান, আনিসুর রহমান, ছাত্রদল নেতা মারুফ ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেন, সমাবেশ শুরুর আগে পুলিশ তাঁদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দিয়েছে। সমাবেশ শেষে বাসায় ফেরার পথে আওয়ামী লীগ কর্মীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের কুপিয়ে জখম করেছেন। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, এভাবে আর আটকে রাখা যাবে না। এরপর বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বাধা মানবেন না।
হামলা ও কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ ও আওয়ামী লীগ চাচ্ছিল না যে আমাদের কর্মসূচি পালিত হোক। তাই সকাল থেকে তারা আমাদের আতঙ্কের মধ্যে রেখেছিল। তবুও আমরা সমবেত হয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের অফিস থেকে বের হতে দেয়নি, বরং ফেরার সময় আমাদের দুই নেতাকে কুপিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগ মিথ্যা। আমার দলের নেতারা কাউকে মারেননি। এটা তাঁদের কোন্দলের কারণে হতে পারে।’