নাটোর ও সিংড়া পৌর শহরে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে

নাটোরের সিংড়া শহরের মাদ্রাসামোড়। বুধবার সকাল ৮টায়।
ছবি: প্রথম আলো

বুধবার সকাল ছয়টা থেকে নাটোর ও সিংড়া পৌর এলাকায় সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। পুলিশের কঠোর নজরদারিতে এসব এলাকায় মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য সব ধরনের পরিবহন বন্ধ আছে। কাঁচাবাজার ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকাল ছয়টা থেকে লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য সিংড়া ও নাটোর শহরের প্রবেশমুখগুলোতে ভোর সাড়ে পাঁচটায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ফলে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলছে না। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। শুধু কাঁচাবাজার ও চালের দোকান খোলা রয়েছে।

সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত নাটোর শহরের কানাইখালী, মাদ্রাসা মোড় ও হরিশপুর এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যাত্রীবাহী কোনো রিকশা ও অটোভ্যানকে শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পণ্যবাহী যানবাহন ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেকে পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। ওষুধ, কাঁচা তরিতরকারি ও মুদিদোকান ছাড়া অন্য দোকান ও বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রয়েছে।

সকাল সাতটায় পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহাকে হরিশপুর বাইপাসে গিয়ে লকডাউন কার্যক্রম তদারক করতে দেখা যায়। সকাল আটটার কিছু পরে তিনি কানাইখালী পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে আসেন। সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত তিনি এখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ততক্ষণ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের কাউকে মাঠে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘লকডাউন পরিস্থিতির ওপর সংক্রমণের হার অনেকটা নির্ভর করছে। তাই আমরা সর্বাত্মকভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’

তবে সাড়ে নয়টার কিছু পরপরই জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ তাঁর সহযোগী নির্বাহীদের নিয়ে কানাইখালী এলাকায় আসেন। সেখান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার পরামর্শ দেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত শহরে সাংসদ, মেয়র, কাউন্সিলর ও রাজনৈতিক নেতাদের লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনকে সহায়তা করতে দেখা যায়নি।

এদিকে সকাল থেকে শ্রমজীবীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের কথা থাকলেও বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, শুরু থেকেই লকডাউন কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হবে। এ জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছে। লকডাউনের কারণে যেসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী বেকার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে সিংড়া পৌর এলাকার রাস্তাঘাটে সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সীমিত আকারে মোটরসাইকেল ও রিকশা-ভ্যান চলছে। মুদি ও নির্মাণসামগ্রীর দোকানপাট ছাড়া অন্য সব দোকান বন্ধ রয়েছে। শহরে পায়ে হেঁটে মানুষের চলাচল লক্ষ করা গেছে। সিংড়ার পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস সকাল ১০টার দিকে কলেজ রোড ও বাজার এলাকা ঘুরে লকডাউন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। সিংড়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জামিল হোসেন জানান, তাঁরা সকাল ছয়টা থেকে শহরের অলিগলি ঘুরে মানুষকে লকডাউন মানতে পরামর্শ দিচ্ছেন। যানবাহনচালকদের শহরে ঢুকতে দিচ্ছেন না।