নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাচ্ছেন তারাগঞ্জের প্রার্থীরা

সয়ার ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন ভোটারদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করছেন
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রামের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানগুলো জমে উঠেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে চলছে নির্বাচনী সভা। সভার পাশাপাশি প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ভোটারদের মন পেতে নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৩০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত ৫ জন, জাতীয় পার্টির ১ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৫ জন, জাসদের ১ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ১৮ জন।

আজ বুধবার সকালে কুর্শা ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আফজালুল হক ভোটারদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। চুরি, ডাকাতি বন্ধ করেছি। তবে কিছু অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্যই আবার প্রার্থী হয়েছি। জনগণ নির্বাচিত করলে সেসব কাজ শেষ করব।’

ইকরচালী ইউপির দোহাজারী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস উদ্দিন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণা করছেন। এ সময় তিনি ভোটরদের প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার বড় সমস্যাগুলো আগে সমাধন করবেন। পাশাপাশি ঘুষ ছাড়া ভিজিডি, ভিজিএফ, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদা আখতার জানান, তিনি ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। নির্বাচিত হলে তিনি বাল্যবিবাহমুক্ত ইউনিয়ন গড়বেন। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে যৌতুক ও নারী নির্যাতন বন্ধেরও প্রতিশ্রতি দেন তিনি।

প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া ও ভোট চাইছেন
ছবি: প্রথম আলো

তবে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি শুনেই ভোটের সিদ্ধান্ত নেবেন না বলে জানান ভোটাররা। ইকরচালীর মাটিয়ালপাড়া গ্রামের টন্না মিয়া বলেন, ‘ভোট আলছে চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা বাড়ি আসি ভোট চাওছে। কওচে ওমাক ভোট দিলে হামার উন্নয়ন হইবে। কিন্তু ভোট গেইলে তো আর ওমরা এগলা কথা মনে থোয় না। সউগ ভুলি যায়। এবার দেখি শুনি সৎ মাইনসোক ভোট দিমো।’

আলমপুর ইউনিয়নের দোয়ালীপাড়া গ্রামের গৃহবধূ আদুরী খাতুন বলেন, ‘প্রার্থীর মিষ্টি কথায় মুইও এবার ভোট দিবার নাও। দেখি শুনি ভোট দেইম। যায় গরিব দুখীর কষ্ট বুঝবে, হামার গ্রামের উন্নতি করবে তাঁর মার্কাত ভোট দেইম।’

এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহও আছে। তবে নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে কোনো আর্থিক লেনদেন বা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।