বিয়ে করলেও পৃথক থাকতে হবে তাদের

গভীর রাতে বিয়ে পড়ানো হয় কিশোর-কিশোরীর। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে হাজির পুলিশ। বর-কনেকে থানায় নিয়ে আসে তারা। পরে তাদের নেওয়া হয় উপজেলা প্রশাসনের কাছে। অভিভাবকেরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বর ও কনেকে একে অপরের বাড়িতে না পাঠানোর লিখিত অঙ্গীকার করেন। এ কারণে আর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ঘটনাটি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার।

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৭ বছর বয়সী বরের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের একটি গ্রামে। সে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে কনের বাড়ি নান্দাইলের খারুয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে। মেয়েটির বয়স ১২-১৩ বছর। কনের বাড়িতে শুক্রবার গভীর রাতে এই বাল্যবিবাহের আয়োজন চলে। গ্রামের কোনো এক বাসিন্দা জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যে নান্দাইল মডেল থানা থেকে একদল পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে যায়। কিন্তু তাদের পৌঁছানোর আগেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পুলিশ ওই কিশোর ও কিশোরীকে থানায় নিয়ে আসে।

শনিবার সকালে থানায় গিয়ে দেখা যায়, ওই কিশোর-কিশোরী হাসাহাসি করছে। থানায় উপস্থিত হন দুই পক্ষের অভিভাবকেরাও। দুপুরে সবাইকে নেওয়া হয় নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ উদ্দিনের কার্যালয়ে। সেখানে অভিভাবকেরা এই বাল্যবিবাহ আয়োজনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। লিখিত অঙ্গীকার করেন, উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বর ও কনেকে একে অপরের বাড়িতে পাঠাবেন না। পরে বিষয়টির ওপর লক্ষ্য রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় দুজন রাজনীতিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ইউএনও এরশাদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, উভয় পক্ষ মুচলেকা দেওয়ায় কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আইন লঙ্ঘন করে যিনি এই বিয়ে পড়িয়েছেন, তাঁকেও পাওয়া যায়নি।